প্রচলিত জনশ্রুতিতে সিংহকে বনের রাজা বলা হয়। সিংহ নিজের এই রাজত্ব ধরে রাখতে কিছু বিষয় অবশ্যই মাথায় রেখে তার রাজত্ব পরিচালনা করে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কাকে ছাড় দিয়ে চলতে হবে এবং কাদের বিরক্ত করা যাবে না। লক্ষ্য করলে দেখবেন সিংহ সবার ওপর খবরদারিত্ব করলেও হাতিকে সে কোনোভাবেই বিরক্ত করে না বরং সমীহ করে চলে এবং হায়েনার অঞ্চল সিংহ সব সময়ই এরিয়ে চলার চেষ্টা করে। এটা সিংহের টিকে থাকার রাজনৈতিক কৌশল। সিংহ জানে তার রাজত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে কিছু বিষয় তার মেনে চলতেই হবে। এই নীতিমালার মাধ্যমেই সিংহ তার রাজত্ব টিকিয়ে রাখে। আর এই নীতিমালাকেই রাজার রাজনীতি বলা হয়।
বিশ্ব রাজনীতির ক্ষেত্রেও যদি আমরা দৃষ্টি দেই তাহলে দেখতে পারবো যে যুক্তরাষ্ট্রও বিশ্বদরবারে নিজেকে রাজসিক প্রভাবে প্রভাবিত করতে সর্বদা উদ্বিগ্ন। কিন্তু বর্তমান বিশ্ব রাজনীতিতেও হাতির অবয়বে কিছু প্রভাবশালী নেতৃত্ব রয়েছে তাদের সামগ্রিক অবয়বকে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো অনুভব করতে পারছেন না।
পুতিন (রাশিয়া) ও শি জিংপিং (চীন) হচ্ছে সেই কাতারের নেতা যাদের বিরক্ত তো করা যাবেই না বরং বিশ্ব রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজত্ব ধরে রাখতে এদের মতো নেতৃত্বকে সমীহ করেই নিজের অবস্থান ধরে রাখতে হবে নচেৎ পরিস্থিতি নিজের অঙ্গুলির বাইরে চলে যাওয়া সময়ের ব্যাপার।
যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদের রাজত্ব ও অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার নিমিত্তে সিংহের রাজত্ব টিকিয়ে রাখার কৌশল যদি অনুসরণ করতো তাহলে আজ অবশ্যই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। ধীরে ধীরে সব অনুগত রাষ্ট্রসমূহ যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছেড়ে দিচ্ছে কেউ এই অযথা কর্তৃত্বের বেড়াজালে আবদ্ধ থাকতে নারাজ। অপ্রয়োজনীয় ও অযথা কর্তৃক হচ্ছে নিজের শরীরে মাছি বসার মতোই বিরক্তিকর বিষয়, যা সীমা অতিক্রম করলে কেউ মেনে নেয় না।