নবলব্ধ স্বাধীনতার সূর্যস্নাত নতুন রাষ্ট্রগুলো গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে নিজেদের একটি ঐক্যবদ্ধ শক্তিতে পরিণত করে। শীতল যুদ্ধের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং তাদের অনুষঙ্গী সহযোগে গঠিত দুই বলয় থেকে পৃথক অস্তিত্বের বলিষ্ঠ ঘোষণা দেয়া হয়েছিল; সম্মিলিতভাবে গোষ্ঠীস্বার্থ অর্জন এবং সংঘর্ষ এড়িয়ে বিশ্ব শান্তি স্থাপনে ভূমিকা পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে এ নবগঠিত জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম) ছিল অনুন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো নিয়ে গঠিত মুখ্যত একটি রাজনৈতিক লক্ষ্যের অনুসারী। বিরোধী দুই গ্রুপ রাজনৈতিক দিকে জোটনিরপেক্ষ। গত শতকের শেষ দশকে শীতল যুদ্ধের নাটকীয় পরিসমাপ্তিতে তার প্রয়োজন ফুরাল। ২০০৯ সালের ‘ন্যাম’ শীর্ষ সম্মেলনেই এটা বিশেষভাবে প্রতিভাত হলো। সে সালেই ব্রিকসের প্রতিষ্ঠা।
বর্তমান শতাব্দীর শুরুতে ২০০১ সালে উন্নত বিশ্বের জি৭-এর বাইরে সম্ভাবনাময় উন্নয়নশীল দেশগুলো নিয়ে একটি মুখ্যত অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক গ্রুপ গঠনের প্রয়োজন অনুভূত হলো। চারটি বৃহৎ অর্থনীতির দেশ ব্রাজিল, রাশিয়া, ইন্ডিয়া ও চীন তাদের দেশের নামের আদ্যক্ষরের সমন্বয়ে BRIC নামানুসারে এ গ্রুপের উন্মেষ সূচিত করল। ২০০৯ সালের ১৬ জুন রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় প্রথম শীর্ষ সম্মেলন। অর্থনৈতিক শক্তিতে ও ব্যাপ্তিতে ওই সব দেশের সঙ্গে তুলনীয়ভাবে শক্তিশালী না হলেও সম্ভাবনাময় এবং অপরিহার্য আফ্রিকা মহাদেশকে প্রারম্ভিক প্রতিনিধিত্ব করার জন্যই পরবর্তী বছরই অন্তর্ভুক্ত হলো সাউথ আফ্রিকা। দেশটির নামের আদ্যক্ষর ‘S’ সমন্বিত হয়ে সংস্থার নামকরণ হলো ‘BRICS’ (ব্রিকস)।