আফগানিস্তানে নতুন করে তালেবান শাসনের দুই বছর পূর্ণ হয়েছে গত আগস্টে। মার্কিনীরা গেছে, কিন্তু তালেবানদের যুদ্ধ থামেনি। তালেবানদের নতুন যুদ্ধের প্রতিপক্ষ এখন নিজ দেশের নারীরা। এক প্রকার প্রত্যাশা ছিল যে, প্রথম বছর যা-ই হোক না কেন দ্বিতীয় বছরে এসে নারীদের জন্য স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে। কিন্তু সেটা তো হয়ই নি, উল্টো নারীদের বিরুদ্ধে স্বাভাবিক তালেবানি ভাবনার চেয়েও কঠোর হয়েছে সরকার।
২০০১ সালের আগস্ট ক্ষমতা হাতে নিয়েই সবার আগে তালেবানরা ১২ বছরের মেয়েদের শিক্ষা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে ১১ লাখ মেয়ের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়ায় এক লক্ষ নারীর পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। প্রথম ঘোষণায় বলেছিল, শরিয়ত আইন মেনে মেয়েদের অধিকার দেওয়া হবে। কিন্তু নারীদের জন্য কোন অধিকারেরই স্বীকৃতি দিচ্ছে না এখন তালেবান সরকার। সরকারি-বেসরকারি কাজ হারিয়েছেন নারীরা। পুরুষ সঙ্গী ছাড়া তাদের বাড়ির বাইরে বেরুনো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি, শাস্তি হিসেবে মিলছে চাবুকের আঘাত।
মধ্যপ্রাচ্য, ইরানসহ অনেক মুসলিম দেশে নারীদের জন্য আইন কানুন অনেক কঠোর হলেও আফাগানিস্তান এখন একমাত্র দেশ যেখানে মেয়েদের পড়ালেখা একদম বন্ধ হয়ে গেছে। তালেবানরা ক্ষমতায় আসার আগে গত ২০ বছর আমেরিকা সহ পশ্চিমা ও অনেক ছোট ছোট দেশও আফগান মেয়েদের শিক্ষায় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছিল। সব অগ্রগতি একসাথে থেমে গেল তালেবানরা ক্ষমতা নিতে না নিতেই। এখন লড়াইটা মূলত নারীদের বিরুদ্ধে।
উপায় না দেখে লাখ লাখ মেয়ে এখন মহিলা মাদ্রাসায় যাচ্ছে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে। কিন্তু সেখানেও তাদের প্রতি আচরণ খুব রূঢ়। এরপরও পরিবারগুলো মেয়েদের মাদ্রাসায় পাঠাচ্ছে বাড়িতে বসিয়ে না রেখে। কিন্তু আমরা যদি ফিরে তাকাই তাহলে দেখবন ২০০১ সালের অগস্টে দ্বিতীয় বারের জন্য আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালিবানরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আগের মতো রক্ষণশীল নীতি নিয়ে এবার আর দেশ শাসন করবে না তারা।
বিজ্ঞাপন