নির্বাচনসংক্রান্ত সাংবাদিকদের এক কর্মশালায় যোগ দিতে সম্প্রতি পটুয়াখালীর কুয়াকাটা গিয়েছিলাম। সেখানে বৃহত্তর বরিশালের ২৫ থেকে ২৬ জন সাংবাদিক ছিলেন। আলোচনাকালে জানতে পারলাম, তাঁদের মধ্যে অন্তত দুজনের মাথায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খড়্গ ঝুলছে। ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতারাই মামলা করেছেন তাঁদের কণ্ঠরোধ করতে। আরেক সাংবাদিক বন্ধু জানালেন, তাঁর নামেও এই আইনে মামলা হয়েছিল, পরে মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।
যদি ২৫ থেকে ২৬ জন সাংবাদিকের মধ্যে ৩ জন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন, সারা দেশের চিত্রটি অনুমান করা কঠিন নয়। প্রথম আলোর সাভার প্রতিনিধি শামসুজ্জামান গত ২৬ মার্চ এক দিনমজুরের কথা উদ্ধৃত করে একটি প্রতিবেদন করেছিলেন। সেই প্রতিবেদন নিয়ে বানানো একটি ফটোকার্ডের সূত্র ধরে তাঁকে সিআইডি পরিচয়ে বাসা থেকে তুলে নিয়ে ২০ ঘণ্টা পর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। তিনি বর্তমানে জামিনে আছেন। এই আইনে মামলা করা হয় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধেও।
প্রথম আলোর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এক আইনজীবী বলেছিলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে যে সাফাই গাওয়া হয়, সেটা সঠিক নয়। এই আইনের ব্যবহারই অপব্যবহার।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি বাতিল করে সাইবার নিরাপত্তা আইন নামে একটি নতুন আইন করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে আইনটির খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের অংশীজনেরা দাবি করেছিলেন, নতুন আইনটি সংসদে পাস করার আগে যেন তাঁদের মতামত নেওয়া হয়। আইনমন্ত্রী বলেছেন, জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর সংসদীয় কমিটির বৈঠকে অংশীজনেরা আলোচনার সুযোগ পাবেন।