রফতানি বহুমুখীকরণ বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার, যা জাতীয় নীতিমালায়ও বারবার প্রতিফলিত হয়েছে। ২০৪১ সালে রফতানি ৩০০ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে রফতানি বহুমুখীকরণ বিশেষভাবে প্রয়োজন। এরই মধ্যে রফতানি ও শিল্পনীতিতে অগ্রাধিকার খাতের তালিকা এবং তাদের জন্য বিভিন্ন সহায়তার অঙ্গীকার করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে রফতানি খাত ক্রমাগত সংকুচিত হয়ে পড়ছে। কোনো এক সময়ে পাট, চা, চামড়া অন্যতম প্রধান রফতানি পণ্য ছিল, ক্রমান্বয়ে তা রফতানি থেকে হারিয়ে গেছে। বাংলাদেশ উৎপাদনবাহিত নন-ট্র্যাডিশনাল পণ্যের প্রতি আগ্রহী হওয়ায় তৈরি পোশাক, টেক্সটাইল, প্লাস্টিক, ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল, চামড়াজাত পণ্য, কৃষিজাত পণ্য ইত্যাদির দিকে আগ্রহী হয়েছে। তবে তৈরি পোশাকের মতো অন্যান্য রফতানি খাত তেমনভাবে এগিয়ে আসতে পারছে না। জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি অনুযায়ী, রফতানি ঘনত্ব একটি দেশের স্বল্পসংখ্যক পণ্য যা অল্পসংখ্যক ব্যবসায়ীর ওপর কেন্দ্রীভূত হয় এমন অবস্থাকে বোঝায়। এ অবস্থা থেকে বের হয়ে রফতানি বহুমুখীকরণ কার্যক্রমের ওপর জোর দেয়া দরকার।
উল্লেখ্য, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের রফতানি ছিল ৫২ দশমিক শূন্য ৮ বিলিয়ন ডলার যা জিডিপির ১১ দশমিক ৩২ শতাংশ। যেখানে ২০২১ সালে মালয়েশিয়ার রফতানি জিডিপির ৬৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ, ভিয়েতনামে ৯৩ দশমিক ২৯ শতাংশ, ভারতের ২১ দশমিক ৪ শতাংশ। একইভাবে অন্যান্য দেশের রফতানিও তুলনামূলকভাবে সুষম সমন্বিত যেখানে বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে একটি খাত অর্থাৎ আরএমজির ওপর নির্ভরশীল, যা জিডিপির প্রায় ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ (২০২২, বাংলাদেশ ব্যাংক)। এছাড়া হালকা প্রকৌশল খাত (৩ শতাংশ), চামড়া খাত (শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ), প্লাস্টিক (শূন্য দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ) জিডিপিতে অবদান রাখছে। এলডিসি হতে উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এবং দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা স্থিতিশীল রাখতে রফতানি ও জিডিপিতে অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাতের অবদান বৃদ্ধি বিশেষভাবে দরকার।