যারা শিল্প-সাহিত্য চর্চা করেন, তাদের প্রায় সকলের মনেই একটা আদর্শ থাকে। নিজের সচেতন চেতনার বার্তা তারা সৃষ্টির মাঝে তুলে ধরেন। এর কালজয়ী উদাহরণ ঋতুপর্ণ ঘোষ। যিনি সেলুলয়েডের ক্যানভাসে এঁকে গেছেন এমন সব গল্প-জীবন-বাস্তবতা, যেগুলো বরাবরই থেকেছে আড়ালে-আবডালে। চেনা ছক ভেঙে নতুন পথ তৈরির এই অসামান্য সাহস আর সৃষ্টিশীলতার সুবাদেই তার ঝুলিতে এসেছিল এক ডজন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
ঋতুপর্ণের জীবন ও কাজে একটি বিষয় সবচেয়ে প্রাধান্য পেয়েছে; তা হলো লিঙ্গ বৈষম্য। এই বিভাজন ভাঙতে চেয়েছেন তিনি। নিজের সিনেমায় যেমন এই বার্তা বারংবার দিয়েছেন, বাস্তব জীবনেও কথায়-সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন। তার ভাষ্য ছিল, “আমার স্বভাব-প্রণোদিত ‘অস্বাভাবিকতা’ নিয়ে আমি বাস করেছি আমার একাকীত্বের বন্দিজীবনে; আর আমার সামনে ছিল সমাজের এক বিরাট কারাগার। যেখানে ঐতিহাসিকভাবে যে কোনও নতুন প্রথাকেই প্রবেশ করতে হয়েছে দণ্ডিত বিদ্রোহীর মতো, অনেক হিংসা এবং রক্তপাতের মূল্যে।”