ডায়রিয়া ও কলেরায় পানিশূন্যতা ঠেকাতে দারুণ কার্যকর এক উপায় খাওয়ার স্যালাইন। আরও অনেক ক্ষেত্রেও খাওয়ার স্যালাইনের ব্যবহার আছে। প্রচুর বমি, ঘাম, ডায়রিয়া হলে অনেক পানি ও লবণ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। ফলে দেহে দেখা দেয় পানিশূন্যতা। এ অবস্থায় খাওয়ার স্যালাইন খেলে পানি ও লবণ উভয়ের ঘাটতিই পূরণ হয়। স্যালাইনে থাকা গ্লুকোজ বা চিনি শরীরে বাড়তি শক্তি জোগাতেও সাহায্য করে। কিন্তু অনেকে স্যালাইন মেশানো পানি খেতে পারেন না, বিশেষ করে শিশুরা। কেউ যদি স্যালাইন খেতে না পারে, তখন তাদের বিকল্প কিছু খাবার দেওয়া হয়, যা দিয়ে স্যালাইনের অভাব পূরণ হবে। চলুন তেমন কিছু খাবার সম্বন্ধে জেনে নেওয়া যাক—
ডাবের পানি
ডাবের পানি শরীরে প্রবেশ করা মাত্র পানির ঘাটতি মেটাতে শুরু করে। সেই সঙ্গে এতে থাকা ইলেকট্রোলাইট কম্পোজিশন ডায়রিয়া, বমি এবং অতিরিক্ত ঘামে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া খনিজের ঘাটতি মেটাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। রিবোফ্লাবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিন ও পাইরিডক্সিনের মতো উপকারী উপাদানে ভরপুর ডাবের পানি। তাই প্রতিদিন পান করলে শরীরে এতটা শক্তি বৃদ্ধি পায় যে জীবাণুরা আর ক্ষতি করার সুযোগ পায় না। সেই সঙ্গে ডাবের পানিতে উপস্থিত অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান নানাবিধ সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
চিড়া পানি
চিড়া পানি ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ভালো উৎস। ডায়রিয়া ও আমাশয়ে চিড়া ভেজানো পানি খুবই উপকারী। চিড়া ভেজালে প্রায় চার গুণ বেড়ে যায়। ১০০ গ্রাম চিড়ায় আছে ৩৪৬ ক্যালরি, ৬.৬ গ্রাম আমিষ, ৭৭.৩ গ্রাম শর্করা, ২.০২ মিলিগ্রাম লোহা ও ২৩৮ মিলিগ্রাম ফসফরাস। চিড়ায় আঁশের পরিমাণ অনেক কম থাকে বলে অন্ত্রের প্রদাহ এবং ডাইভারটিকুলাইসিস রোগ প্রতিরোধে উপকারী। খাওয়ার আগে চিড়া বিশুদ্ধ পানিতে ধুয়ে নিন। তিনবার ধোয়ার পর আবার কিছুটা পানিতে ভিজিয়ে নিন। এরপর স্বাদমতো লবণ ও চিনি দিয়ে চটকে পরিবেশন করুন। স্যালাইন না খেলেও চলবে।
ভাতের মাড়
ভাতের মাড়ে রয়েছে হরেক রকমের পুষ্টি উপাদান। গবেষণায় দেখা গেছে, ভাতের মাড়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভিটামিন বি এবং ভিটামিন ই রয়েছে। এতে শর্করা, আয়রন, ফসফরাস এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। চীনা বিজ্ঞানী মি. লিন ফেলে দেওয়া ভাতের মাড় নিয়ে গবেষণা করে জানাচ্ছেন, ভাতের মাড়ে ১০ গুণ লোহা, ৪ গুণ ক্যালসিয়াম, ১২ গুণ ম্যাঙ্গানিজ, ৪ গুণ তামা এবং ২ গুণ মেলানিয়াম রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে টোকোট্রিনল এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান। তাই অল্প হলুদ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে খেলে শরীরের পানিশূন্যতা রোধ হবে।