গল্পটি এমন এক শহরের, যেখানকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ছোট ছোট উড়োজাহাজ বা প্লেন আছে। গাড়ির গ্যারেজ যেমন আমাদের কাছে এখন খুব পরিচিত একটি বিষয়, ওই শহরে উড়োজাহাজের হ্যাঙ্গারও তেমনি। সেখানে এমনকি গাড়ির পাশাপাশি রাস্তায় দেখা পাবেন উড়োজাহাজেরও।
শুনতে যতই অস্বাভাবিক লাগুক, এমন শহর বা বসতি সত্যি আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ওই এলাকার নাম ক্যামেরন এয়ারপার্ক স্টেটস। এখানে প্রত্যেকেই তাঁদের বাড়ির সামনেই উড়োজাহাজে চেপে চলে আসতে পারেন। যেখানে যেতে চান, নিজের ব্যক্তিগত ছোট্ট প্লেনটায় চেপে বসলেই হলো। এই আজব শহরের ছবি ও ভিডিও অবশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ আলোড়ন তুলেছে।
মজার ঘটনা, শহরটির নকশাই করা হয়েছে পাইলটদের কথা ভেবে। একটি বিমানবন্দর ঘিরেই গড়ে তোলা হয়েছে শহরটি। যেন পাইলটেরা সেখান থেকে সহজে বাড়িতে আসতে এবং বাড়ি থেকে কোথাও যেতে পারেন। তাঁদের বাড়িতে গ্যারেজ যদি না-ও থাকে, উড়োজাহাজ রাখার হ্যাঙ্গার ঠিকই আছে। অফিসে কিংবা বেড়াতে গেলে তাঁদের বড় ভরসা এই উড়োজাহাজ।
এবার বরং এ রকম একটি শহরের গোড়াপত্তন কীভাবে হলো তা জেনে নেওয়া যাক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেক এয়ারফিল্ডই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল। পাইলটের সংখ্যা ১৯৩৯ সালে যেখানে ছিল ৩৪ হাজার, ১৯৪৬ সালে তা বেড়ে হয় ৪ লাখ। সেখানকার সিভিল অ্যাভিয়েশন অথোরিটি দেশজুড়ে আবাসিক এয়ারফিল্ড গড় তোলার প্রস্তাব দিল। এর একটি উদ্দেশ্য অব্যবহৃত এয়ারফিল্ডগুলো কাজে লাগনো। অপরটি অবসরপ্রাপ্ত সামরিক পাইলটদেরও একটি ভালো ব্যবস্থা হওয়া। তাই এমন সব বসতি গড়ে উঠল, যেখানে সবাই কোনো না কোনোভাবে উড়োজাহাজ চালনার সঙ্গে সম্পর্কিত। আর এমনই একটি আবাসিক এয়ারপার্ক ক্যামেরন এয়ার পার্ক।