দেশে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর অন্যতম বিষয় হচ্ছে, দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া। এ নিয়ে সংসদে উত্তপ্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, অর্থ পাচারকারী কারা, যদি সেই তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন, তাহলে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া অর্থমন্ত্রীর পক্ষে সহজ হবে। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘কারা অর্থ পাচার করে, সেই তালিকা আমার কাছে নেই। নামগুলো যদি আপনারা জানেন যে, এরা এরা অর্থ পাচার করেন, আমাদের দিন।’ তারপর সময় গড়িয়েছে অনেক। কিছু টাকা পাচারকারীর নাম এসেছে পত্রপত্রিকায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, দুদকের কিছু তৎপরতাও দেখেছে জনগণ। কিন্তু এ পর্যন্তই। পরবর্তী সময় এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য আর কোনো শোনা যায়নি।
ইতিমধ্যে খবর বেরিয়েছে, একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের মালিক সিঙ্গাপুরে কমপক্ষে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত কোনো অনুমতি তিনি নেননি। সবাই জানেন, এই গ্রুপের মালিকানায় বাংলাদেশে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও একাধিক ব্যাংক আছে। এটা কোনো জাদুমন্ত্রে ঘটেনি। ইসলামী ব্যাংক থেকে তারা একাই ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। এর আগে দুটি ভুয়া কোম্পানি খুলে, একই ব্যাংক থেকে দুই হাজার ৪৬০ কোটি টাকা নেওয়া হয় ঋণের নামে এবং আরও কয়েকটি ব্যাংক থেকে নেওয়া হয় প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ঋণ নিয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা। পুকুরে ঢিল ছুড়লে যেমন ঢেউ উঠে এবং কিছুক্ষণ পরে মিলিয়ে যায় তেমনি বাংলাদেশের দুর্নীতিসংক্রান্ত সংবাদের পুকুরে এসব খবর ঢেউ তুলে মিলিয়ে যায় বারবার। কিন্তু জনগণ হারায় তাদের সম্পদ আর আমানত। বিপরীতে সম্পদে ফুলে উঠে এসব প্রতিষ্ঠান।