প্রিন্সিপাল ইবরাহিম খাঁর ‘জহুর ধোপা’ গল্পটির কথা বড্ড মনে পড়ে। অতি নিম্ন আয়ের পেশাজীবী জহুর ধোপা হবু খান সাহেবের কাপড় খানসামাকে ভুল ডেলিভারি দেওয়ার জন্য খানসামা তাকে বেদম মারধর করে। খানসাহেব এ জন্য আইনের আশ্রয় নিতে জহুর ধোপাকে উপদেশ দেন। জবাবে জহুর বলেছিল, ‘না হুজুর। আমি খানসামাকে সঙ্গে সঙ্গে মাফ করে দিয়েছি। তার বিরুদ্ধে কোনো নালিশ নাই। আমাদের পীর হুজুর বলেছেন, বাবারা ছোটখাটো ফ্যাকড়া ফ্যাসাদে না জড়িয়ে তা মন থেকে মুছে ফেলা উচিত। কেননা শেষ বিচারের দিন তুমি যদি খোদার কাছে এসব ছোটখাটো ফরিয়াদের ফিরিস্তি পাড়তে থাক তাহলে মাবুদের কাছে আসল ফরিয়াদ জানানোর সময় পাবে না।’
অর্থনৈতিক স্বয়ম্ভরতা অর্জন ব্যতিরেকে স্বাধীনতা যে নির্মল নয়, তা সব দেশ ও জাতি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। ইতিমধ্যে এ কথা বহুল উচ্চারিত যে, একুশ শতকে অর্থনৈতিক উন্নয়নই হবে তাবত রাষ্ট্র ও জাতির শ্রেষ্ঠত্বের এবং প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার অন্যতম নিয়ামক। ভূরাজনীতির ভায়রা ভাইদের ধ্যান জ্ঞান এখন কীভাবে অর্থনৈতিক স্বার্থ ও শক্তি অর্জন বা উদ্ধার করা যায়।
তাই অর্থনৈতিক মুক্তিকে গণতন্ত্রায়নের অন্যতম উপলক্ষ ও উপায় হিসেবে বিবেচনার দাবি সোচ্চার হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, যেখানে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে এখনো নিরলস প্রচেষ্টা ও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। সেই আন্দোলনে ছোটখাটো প্রসঙ্গ-অপ্রসঙ্গ এনে সেখানে আত্মশক্তি ক্ষয় করাটা বোকামি। আপনা মাঝে শক্তি ধরেই দুর্জনেরে হানো, নিজেকে অসহায় না জেনো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জাপানি জাতির আত্ম শক্তিসাধনার স্বরূপ সন্ধানে গিয়ে দেখেছেন জাপানিরা বাজে চেঁচামেচিতে নিজেদের বল ক্ষয় করে না, ফলে প্রয়োজনের সময় টানাটানি পড়ে না।