গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানীর মগবাজার এলাকার রেস্তোরাঁগুলোকে বরাবরের মতো ব্যস্তই দেখা গেল। নাশতা করা, সঙ্গে খাবারের দরদাম যাচাই করতে মোড়ের কাছে এক রেস্তোরাঁয় বসা গেল। খাবই খাব নামের ওই রেস্তোরাঁয় দুটি পরোটা, একটি ডিম ও ডাল-ভাজির নাশতার খরচ এল ৭০ টাকা। শুধু একটি ডিমেরই দাম রাখা হয়েছে ৩০ টাকা।
রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক সিদ্দিক খান প্রথম আলোর প্রতিবেদককে বললেন, ডিম ভাজতে তেল, কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ লাগে। ডিমের দাম বেড়েছে, কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজের দামও বাড়তি। আর আমরা ডিম ভাজির জন্য বোতলের তেল ব্যবহার করি। তাই একটি ডিমভাজি ৩০ টাকা না রাখলে পোষায় না। আর রান্না করা ডিমের প্রতি বাটির দাম ৪০ টাকা।
রাজধানীর মগবাজার, বাংলামোটর, পান্থপথের ক্যাফে নিউ স্টার, রায়তা, ক্যাফে ডার্লিং, বিসমিল্লাহ রেস্তোরাঁর মতো আরও ছয়টি রেস্তোরাঁয় গিয়ে জানা গেল, ডিমের দাম বাড়ানোর পর একটা ডিমভাজি অধিকাংশ রেস্তোরাঁয় ২৫ টাকা রাখা হচ্ছে। তবে দু-একটি রেস্তোরাঁ ডিমভাজির দাম এখনো বাড়ায়নি, আগের মতো ২০ টাকাই রাখছে। হুট করে দাম বাড়ালে ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন—এই ভয়ে দাম বাড়াচ্ছে না এসব রেস্তোরাঁ। লাভের অঙ্ক কমলেও তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
মগবাজারের ক্যাফে নিউ স্টারের বিক্রেতা সাদেক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডিমের দামে একটু স্থিতিশীলতা না এলে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তে যেতে পারছি না। কারণ, বাজারটা বেশি অস্থির। আরও দু-একটি দিন দেখে তারপর দাম বাড়াতে হবে।’
গত বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে দেশের বাজারে আটা-ময়দার দাম বাড়ার পর রেস্তোরাঁয় একেকটা পরোটার দাম ৫ থেকে বেড়ে ১০ টাকায় উঠেছে। আর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ১০ টাকার ডাল-ভাজি এখন হয়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। ডিমভাজির দাম গত এক বছরের ব্যবধানে ১৫ থেকে ২০ টাকা হয়ে এখন মোটামুটি ২৫ টাকায় স্থির হওয়ার পথে। তাতে দুই পরোটা, ডাল-ভাজি ও একটি ডিম দিয়ে এখন সকালের নাশতা করতে চাইলে ৬০ থেকে ৬৫ টাকার নিচে সম্ভব হচ্ছে না।
পান্থপথে নাশতা সেরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাব্বির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ক্লাস থাকলে সকালের নাশতা রেস্তোরাঁয় করতে হয়। সাধারণ মানের নাশতা করে একটা চা-কফি খেলেই প্রায় ১০০ টাকা চলে যায়। আগে এই টাকায় দুপুরের খাবার হয়ে যেত।