দেশের সব জেলাতেই সব সময় কমবেশি দই তৈরি হয়। কিন্তু গত শতকের শুরু থেকে এখন অবধি অনন্য স্বাদ, মান, জনপ্রিয়তা আর সুখ্যাতিতে বগুড়ার দই-ই সবচেয়ে এগিয়ে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় এ দইয়ের বেশ চাহিদা রয়েছে। এমনকি তা দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও যাচ্ছে।
বগুড়ার বিখ্যাত সেই সরার দই গত ২৫ জুন ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বগুড়া রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) বগুড়ার সরার দইকে জিআই পণ্য হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে। এর ফলে বগুড়ার দই বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য হিসেবে বিশ্বে এটির মর্যাদা যেমন বাড়বে, তেমনি রপ্তানিতেও সুবিধা মিলবে। জিআই স্বীকৃতি এই পণ্যের মান ও দাম নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে।
কোনো একটি দেশের নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মাটি, পানি, আবহাওয়ার প্রেক্ষাপটে সেখানকার জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে সেই দেশের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। দেশের জিআই পণ্যের তালিকায় আছে জামদানি, ইলিশ, ক্ষীরশাপাতি আম, মসলিন, বাগদা চিংড়ি, কালিজিরা চাল, বিজয়পুরের সাদা মাটি, রাজশাহীর সিল্ক, রংপুরের শতরঞ্জি, দিনাজপুরের কাটারিভোগ চাল, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফজলি আম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আম এবং নাটোরের কাঁচাগোল্লা।
বগুড়া চেম্বারের সহসভাপতি মাফুজুল ইসলাম বলেন, বগুড়া জেলায় প্রতিদিন এক কোটি টাকার বেশি দই বিক্রি হয়। সেই হিসাবে বছরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার দই কেনাবেচা হয়। মিষ্টি বিক্রি হয় প্রায় ৩০০ কোটি টাকার। এ ছাড়া মাটির সরা ও হাঁড়ি বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন পাল সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ।