কাজ থেকে বাড়ি ফেরার সময়ে দেখলেন বাড়ির দরজার কাঠামো ঘিরে ফুটে রয়েছে একগোছা মাধবীলতা। ব্যস! তার ঘ্রাণে, বর্ণে সারাদিনের ক্লান্তি ধুয়ে গেল। বাড়ির শোভা বাড়িয়ে তুলতেও অনেকেই লতানো গাছ বসান পাঁচিলে, প্রবেশপথের দু’পাশে। সবুজের সমাহার যেমন চোখের আরাম দেয়। তেমন ফুলের রং দেখে ভরে ওঠে মন। ঘরে রাখার গাছের মতোই এখন এই লতানো গাছের চাহিদাও তুঙ্গে। শুধু বাড়ির প্রবেশপথ নয়, চাইলে বারান্দার রেলিংয়ে বা ছাদের কার্নিশেও লাগানো যেতে পারে।
মাধবীলতা বা অ্যালামুন্ডা ছাড়া আর কোন কোন লতানো গাছ রাখতে পারেন তালিকায়?
১) বুগেনভিলিয়া বা কাগজফুল
যাঁরা গাছ ভালবাসেন, তাঁদের মধ্যে বুগেনভিলিয়ার প্রেমে পড়েননি, এমন মানুষ কমই আছেন। গাঢ় গোলাপি, লাল, কমলা, হলুদ, গোলাপি, সাদা— হরেক রঙের রঙিন ডালি সাজায় এই গাছ। যে হেতু গাছে কাঁটা থাকে, তাই পাঁচিলের পাশে, থামের গঠন বরাবর রাখলে ভাল। প্রাথমিক যত্ন নিয়ে গাছ বেড়ে গেলে পরে আর তেমন খেয়াল রাখার দরকার পড়ে না। খুব বেশি জলেরও প্রয়োজন পড়ে না।
২) মর্নিং গ্লোরি
ধরুন ঘুম ভাঙতেই কফির কাপ হাতে নিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছেন। হঠাৎই চোখ চলে গেল ছোট ছোট বেগনি রঙের ফুলের দিকে। সেই ফুলের স্নিগ্ধ সৌন্দর্যে মন ভাল হয়ে যেতে বাধ্য। সকালবেলায় ফোটে বলেই এমন নাম। চোঙাকার, অনেকটা ট্রাম্পেটের মতো দেখতে ফুলগুলি। মর্নিং গ্লোরির ফুল সাদা, নীল, গোলাপি, বেগুনি রঙের হয়। দরকার পর্যাপ্ত পরিমাণে সূর্যালোক। তবে খেয়াল রাখবেন, গাছের মাটিতে যেন জল জমে না থাকে। আলো-হাওয়া দরকার হয় বলে বারান্দায় ভাল থাকে মর্নিং গ্লোরি।
৩) ব্লিডিং হার্ট
হৃদয়ে রক্তক্ষরণ। না কোনও ব্যক্তির নয়, এ শুধু গাছের নাম। সাদা রঙের আবরণের মধ্যে থেকে রক্তবর্ণের পাপড়িগুলি দেখলে মনে হয় যেন সত্যিই যেন হৃদয় থেকে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত চুঁইয়ে পড়ছে। তবে এই ফুল সাদা এবং গোলাপি রঙেরও হতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল এবং সূর্যালোক পেলেই গাছ বেড়ে উঠবে তরতরিয়ে।
৪) বুদ্ধ জুঁই বা লতানো জুঁই
মিষ্টি গন্ধ এবং সাদা রঙের সমাহার মনে অদ্ভুত এক শান্তি এনে দিতে পারে। কাজ থেকে ফিরে রাতে বারন্দায় গিয়ে দাঁড়ালে মিষ্টি গন্ধে উদ্বেগ কাটিয়ে দিতে পারে। জুঁই ফুল সাধারণত বর্ষাকালে বেশি ফোটে। মাটিতে একটু জল আর সার দিলেই গাছ বেড়ে উঠবে। বাড়ির পাঁচিল ভরিয়ে রাখবে ফুলে।
৫) ফ্লেম ভাইন
নীল, হলুদ বা স্নিগ্ধ রং ছাড়াও অনেকেই আগুনের মতো উজ্জ্বল রং পছন্দ করেন। ট্রাম্পেটের মতো দেখতে এই ফুলগুলি ফুটে থাকে গোছা ভরে। নিয়মিত জল ও পর্যাপ্ত পরিমাণে সূর্যের আলোয় তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে ফ্লেম ভাইন।