বলিউডের অন্যতম নামজাদা ও কৃতী পরিচালক তিনি। শুধু পরিচালকই নন— চিত্রনাট্যকার, সংলাপ লেখক এবং প্রযোজক হিসাবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। বলিউডে ইতিমধ্যেই কাটিয়ে ফেলেছেন তিনটি দশক। এখন একডাকে তাঁকে চেনেন আন্তর্জাতিক বিনোদন বিশ্বের তাবড় ব্যক্তিত্বরাও। তিনি অনুরাগ কাশ্যপ। ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’র হাত ধরে পরিচালক হিসাবে পথচলা শুরু তাঁর। তার আগে অবশ্য রামগোপাল বর্মার ‘সত্য’ ছবির চিত্রনাট্য লিখে ফেলেছেন তিনি। তার পরে ‘দেব ডি’, ‘গুলাল’, ‘গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর’-এর মতো ছবি উপহার দিয়েছেন অনুরাগীদের। আলো-আঁধারির জগৎ ও সেই জগতের সঙ্গে জড়িত মানুষদের মনস্তত্ত্ব পর্দায় তুলে ধরতে সিদ্ধহস্ত তিনি। তবে শুধু সেখানেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি অনুরাগ। ‘মনমর্জ়িয়াঁ’, ‘অলমোস্ট প্যার উইথ ডিজে মোহব্বত’-এর মতো ছবিতে প্রেমের গল্পও বলেছেন তিনি। চলতি বছরে যদিও আবার নিজের চেনা আলো-আঁধারির জগতে ফিরেছেন অনুরাগ, ‘কেনেডি’র হাত ধরে। কয়েক মাস আগেই কান চলচ্চিত্র উৎসবেও স্বীকৃতি লাভ করেছে এই ছবি। আপাতত সেই ছবির প্রচারেই ব্যস্ত অনুরাগ। ‘কেনেডি’-র মাধ্যমে বলিউডে এক প্রকার প্রত্যাবর্তন করতে চলেছেন অনুরাগ। অথচ কয়েক বছর আগে সেই বলিউড থেকেই পাততাড়ি গুটিয়ে ফেলার কথা ভেবেছিলেন পরিচালক। কেন?
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অনুরাগ জানান, কয়েক বছর আগে বিভিন্ন কারণে বলিউডে প্রায় দমবন্ধ হয়ে এসেছিল তাঁর। নেতিবাচক চিন্তাভাবনার জেরে সেই পরিস্থিতি থেকে বেরোনোর পথ খুঁজছিলেন তিনি। অনুরাগ জানান, সেই সময় দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি থেকে তাঁর কাছে প্রস্তাবও এসেছিল ছবি বানানোর। তামিল, মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রিতে ছবি বানানোর সুযোগও পেয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই-ই নয়, একাধিক দেশের চলচ্চিত্র উৎসবের চেনা মুখ হওয়ার কারণে জার্মান ও ফরাসি বন্ধুদের তরফে একই রকম প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি। তা সত্ত্বেও বলিউড ছেড়ে যাননি অনুরাগ। কেন? অনুরাগ জানান, অন্য ভাষায় ছবি তৈরির কথা ভাবতে গিয়ে তিনি উপলব্ধি করেন হিন্দি ভাষায় ও সেই সংস্কৃতিতে তাঁর যতটা দখল—অন্যান্য কোনও ভাষা ও সংস্কৃতিতে সেই দখল নেই তাঁর। তা হলে কী ভাবে সেখানকার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ছবি বানাবেন তিনি? এই ভাবনা থেকেই বলিউড ছাড়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন অনুরাগ। তবে এখন ঝুটঝামেলা থেকে অনেক দূরে থাকেন তিনি। নেতিবাচক চিন্তাভাবনায় আমল না দিয়ে এখন স্রেফ ছবি বানানোয় মন দিয়েছেন অনুরাগ।