বর্তমান সরকার ২০৩০ এবং এরপর ২০৪১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা হরহামেশাই বলে আসছে। পরিকল্পনার কথা শুধু বলার মাঝেই সীমিত নেই, আছে অনেকখানি আত্মতৃপ্তির আভাসও। আশাবাদী পরিকল্পনার কথা বলা যত সহজ, সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা ততটা সহজ নয়।
আজকের পৃথিবীতে পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হয় অভ্যন্তরীণ সম্পদ ও সক্ষমতার ওপর। বিদেশি সাহায্য-সহযোগিতার প্রয়োজন আছে; কিন্তু সম্পূর্ণ নির্ভরতা অনেক সময় পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। তেমন একটি আমদানিনির্ভর খাত হলো জ্বালানি খাত। এ খাতের আমদানিনির্ভরতা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। এ নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের ধারণা অনুযায়ী, ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের জ্বালানি খাতে আমদানি ব্যয় হবে ২৪-৩০ বিলিয়ন ডলার। এ বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রার সংস্থান কোথা থেকে হবে, সেটাই এখন বড় ভাবনার বিষয়।
দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে বার্ষিক ৬৫ লাখ টন। এ চাহিদার ৬৩ শতাংশ পরিবহণ খাতে এবং বাকি ৩৭ শতাংশ সেচ, বিদ্যুৎ ও শিল্প খাতে। দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে ২০২৩ সালে ৫৪ লাখ ৬০ হাজার টন জ্বালানি আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিভিন্ন দেশ থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে আমদানি করা হবে ৩৮ লাখ ৬০ হাজার টন পরিশোধিত এবং সৌদি আরব ও আবুধাবি থেকে ১৬ লাখ টন অপরিশোধিত তেল। সিদ্ধান্ত মোতাবেক চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রথম ৬ মাসে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ৭ লাখ ৯১ হাজার টন অপরিশোধিত এবং ২৭ লাখ ৯০ হাজার টন পরিশোধিত তেল আমদানি করেছে। আমদানিকৃত জ্বালানির মধ্যে আছে ডিজেল, জেট ফুয়েল, অকটেন ও ফার্নেস অয়েল।