চলতি বছরের বাকি দিনগুলোয় ওপেক প্লাসের জ্বালানি সরবরাহের পরিমাণ আরো সংকুচিত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ)। বিপরীত দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়ছে চাহিদা। ফলে জ্বালানি তেলের মূল্যসূচকে আরো কয়েক দফা ঊর্ধ্বগতি দেখা যেতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। খবর রয়টার্স।
দি অর্গানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ (ওপেক) সদস্য দেশগুলো ও তাদের জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী মিত্রদের একসঙ্গে ওপেক প্লাস বলা হয়েছে। দেশগুলোর মাধ্যমে সম্প্রতি উৎপাদন কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত ও পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি জ্বালানি তেলের দামের ওপর চাপ তৈরি করেছে। গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের মূল্য প্রতি ব্যারেল ৮৮ ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা জানিয়েছে, যদি ওপেক প্লাসের দেশগুলো তাদের উৎপাদন বর্তমান পর্যায়ে স্থির রাখে, তাহলে জ্বালানি তেল কারখানাগুলোয় তৃতীয় প্রান্তিকে প্রতিদিন ২২ লাখ ব্যারেল উত্তোলিত হবে। চতুর্থ প্রান্তিকে প্রতিদিন উত্তোলিত হতে পারে ১২ লাখ ব্যারেল। সেখানে মূল্য আরো বাড়ার আশঙ্কা তো থাকছেই। প্রতিষ্ঠানটির ভাষ্য অনুযায়ী, ওপেক প্লাসের সরবরাহকে আরো সংকোচনের ঘটনা অন্যান্য অর্থনৈতিক অনুঘটকের পাশাপাশি ভূমিকা রাখবে, সেই সঙ্গে চাহিদা বৃদ্ধি তো রয়েছেই।
২০২২ সালের শেষ দিক থেকেই ওপেক জ্বালানি তেলের উৎপাদন কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাজার চাঙা করার উদ্দেশ্যে। পরিকল্পনা অনুসারে. ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সরবরাহ কম রাখা হবে। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, জুলাইয়ে বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের সরবরাহ প্রতিদিন ৯ লাখ ১০ হাজার ব্যারেল কম ছিল। এর মধ্যে সৌদি আরব স্বেচ্ছায় আরো বেশি সরবরাহ কমানোর নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু রাশিয়ার জ্বালানি তেল রফতানি জুলাইয়ে প্রতিদিন ৭৩ লাখ ব্যারেলে স্থির ছিল।
তবে আগামী বছর চাহিদা কমে প্রতিদিন ১০ লাখ ব্যারেলে দাঁড়াতে পারে। মহামারী-পরবর্তী সময়ে বৃহৎ পরিসরে অর্থনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তন ও বিশ্বজুড়ে মানুষের বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির প্রতি ঝুঁকে পড়া তার পেছনে প্রধান ভূমিকা রাখতে পারে। আইইএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মহামারী-পরবর্তী পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার সিংহভাগই শেষ হয়ে গেছে। তার পরও বৈশ্বিক অর্থনীতিতে রয়েছে বহুমুখী প্রতিবন্ধকতা। জ্বালানি তেলের বাজারে যথেষ্ট মন্থরতা থাকতে পারে।