অনেকে আগে থেকেই ঠিক করে রাখে যে সে বিসিএস দেবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর একাডেমিক ক্যারিয়ারটা নামমাত্র চালিয়ে যায় আর লাইব্রেরিতে বসে বিসিএসের প্রস্তুতি নেয়। আমার বিষয়টা মোটেও সে রকম ছিল না। আমি যখন ইসিই (ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং) তৃতীয় বর্ষে পড়ি, তখন বুঝতে পারলাম, আমার বিষয়ে বাংলাদেশে চাকরির অবস্থা খুব একটা সুবিধার নয়। হয় দেশের বাইরে থিতু হতে হবে, নতুবা দেশে বিসিএস দিয়ে চাকরি করতে হবে। চতুর্থ বর্ষে পড়তে পড়তে আমার অনেক বন্ধুবান্ধবীই বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আমি কিছু বুঝে উঠতে না পেরে অনার্স শেষ করে সোজা মাস্টার্সে ভর্তি হয়ে যাই।
মাস্টার্সে অন্য সব বিষয় ঠিকঠাকই ছিল, তবে থিসিসটা ভোগাচ্ছিল। এর ভেতর শুরু হলো মহামারিকাল, লকডাউন। তখন একাডেমিক পড়াশোনার চাপ একটু কম থাকায় আউটসোর্সিং শুরু করলাম। ভালোই আয় করছিলাম। কাজটা পারছি বলেই মনে হলো, আমি যেকোনো সময় জীবনে ব্যর্থ হলে আউটসোর্সিংয়ের কাছে ফিরতে পারব। সময় থাকতে থাকতে অন্তত একটা বিসিএস ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে দিয়েই দেখি কী হয়। আমি তখন যশোরের শার্শায়, আমাদের বাড়িতে। বিসিএসের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য মোটেও সেটা উপযুক্ত জায়গা নয়। কেননা, সেখানে কোনো কোচিং তো নেইই, বইপত্রও পাওয়া যায় না। শার্শার লাইব্রেরিতে ঠিকমতো কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সও পাওয়া যায় না। অনেকেই গ্রুপ স্টাডি করে বিসিএসের প্রস্তুতি নেয়। আমার সেই সুযোগও নেই। একে তো আমি অন্তর্মুখী, তার ওপর ওখানে আমার পরিচিত আর কেউ বিসিএসের জন্য পড়াশোনা করছে কি না, সেটাও আমি জানি না।