চট্টগ্রাম নগরে জলাবদ্ধতার জন্য কমিটির চিহ্নিত করা ৫ কারণ হলো অতিবর্ষণ ও একইসঙ্গে কর্ণফুলী নদীতে পূর্ণিমার সময় অতিরিক্ত জোয়ার, খালের সংস্কার কাজের চলমান অংশে মাটি থাকার ফলে খাল সংকোচন, নগরের খাল ও নালা–নর্দমা বেদখল, নাগরিকদের অসচেতনতার কারণে খাল-নালায় বর্জ্য ফেলা এবং নিয়মিত খাল-নালা থেকে মাটি উত্তোলন না করা।
এছাড়া মহানগরে জলাবদ্ধতার আরও তিন কারণ রয়েছে। এর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, নালা ও খাল বেদখল এবং নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার রোধে প্রশাসনিক ব্যর্থতার কথা অনেকেই বলছেন।
অতিবৃষ্টির পানি কর্ণফুলী নদী হয়ে বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের পানি চাক্তাই খাল, ডোম খাল, হিজড়া খাল, নয়া মির্জা খাল, শীতল ঝর্ণা খাল, বামুননয়া হাট খাল, গুলজার খাল, বীর্জা খাল, ইছান্যা খাল, মাইট্টা খাল, লালদিয়ার চর খাল, ত্রিপুরা খাল, নাছির খাল, গয়না ছড়া খাল, কাট্টলী খাল, চশমা খাল দিয়ে নগরীতে প্রবেশ করে থাকে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন এই ১৭টি খাল এক শ্রেণির খাল-খেকোর কবলে পড়ে এখন নালায় পরিণত হয়েছে। নগরীর মানচিত্রে খাল থাকলেও বাস্তবে অনেক খালের কোনো চিহ্ন নেই! ফলে ভারী বৃষ্টিপাত হলে পরিস্থিতি হয় ভয়াবহ।
প্রবেশ করা জোয়ারের পানি ও বৃষ্টিপাত একাকার হয়ে যায়। এই পানি ভরাট ও বেদখল হওয়া খাল ও নালা দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারে না। ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে নগরীর প্রধান প্রধান বেশ কয়েকটি সড়ক উঁচু করা হলেও অলিগলিসহ বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় সংকট এখন চরমে।
অপরদিকে প্লাস্টিক ব্যাগ বা পলিথিন যা আজ আমাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০০১ সালে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু আজও আমরা তা ব্যাবহার করছি লাগামহীনভাবে। যা ড্রেনে জমে গিয়ে তৈরি করে জলাবদ্ধতার। এর জন্য দায়ী কে সিটি কর্পোরেশন নাকি আমরা?
আমরা লাগামহীনভাবে পাহাড়ের মাটি ও এর গাছ কেটে তৈরি করছি বিলাসবহুল বাড়ি ও আসবাবপত্র। যার ফলে অতিবৃষ্টির সময় পাহাড়ের মাটি পানি দ্বারা প্রবাহিত হয়ে ড্রেন, নদী, নালা, খাল ভরাট করে এবং পানির স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা দিচ্ছে। যার ফলে ঘটে জলাবদ্ধতা।