ব্রিটিশ ভারত ভাগ হওয়ার প্রাক্কালে জন্ম হয় এক ফুটফুটে শিশুর। জন্মের পর গোলাপের মতো শিশুটির নাম রাখা হয় রোজি, পুরো নাম লায়লা নার্গিস। শিশুটি হাঁটতে শেখার পর টলমল পায়ে যত না হাঁটে তার চেয়ে বেশি নেচে বেড়ায়। সেই সময়কার সংস্কৃতিমনা লোকেদের বাস ছিল টিকাটুলি এলাকায়। পড়শি ছিলেন বেগম সুফিয়া কামাল, মোহাম্মদ মোদাব্বের, শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক প্রমুখ।
সেইখানেই নানা-নানি, মামা-মামি ভাইবোনসহ বাবা-মা সবাই মিলে এক যৌথ পরিবারে বাস ছিল তাদের। নানা আলী আহমেদ রাজনীতি করতেন। বাড়িতেই ছিল তার পত্রিকার প্রেস। মামা, খান সরওয়ার মুরশিদ স্বনামধন্য অধ্যাপক। মামি রাজনীতির পাশাপাশি রেডিওতে ঘোষকের কাজও করতেন।
কাস্টমসে কর্মরত মা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সেই সময়কার একজন গোল্ড মেডেলিস্ট কো-অপারেটিভ কলেজের অধ্যাপক বাবার তৃতীয় সন্তান রোজি। মাত্র আড়াই বছর বয়সে স্টেজে নাচ করেন রোজি।
নাচের শুরুতে এত ছোট্ট শিল্পীকে দেখা যাচ্ছিল না বলে বড় টেবিলের ওপর উঠিয়ে দিয়ে তার নাচ দর্শকদের দেখানো হয়। সেই থেকে শুরু। তারপর নাচে আগ্রহের কারণে বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে ভর্তি করানো হয়। পাশাপাশি পাড়ায় চাঁদের হাটের সদস্য হয়েও চলতে থাকে নাচ।
সাংস্কৃতিক দলের সদস্য হয়ে বিদেশ ভ্রমণও করেন। নাচের পাশাপাশি রেডিও নাটকে অভিনয় করতে থাকেন রোজি। নারী শিক্ষা মন্দির বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করে পরবর্তী সময় কামরুন্নেসা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ইডেন কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। এর মাঝে বিএ-তে ভর্তি হওয়ার পরপরই তৎকালীন চলচ্চিত্রের নায়ক সৈয়দ হাসান ইমামের সাথে বিয়ে হয়ে লায়লা নার্গিস হয়ে যান লায়লা হাসান।