বরগুনা পৌর শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ খাকদোন নদী। অপরিকল্পিত সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ, প্রভাবশালীদের দখল ও পলি জমে প্রায় মৃত এক খালে পরিণত হয়েছে। ব্যাহত হচ্ছে নৌযান চলাচল। শুধু এ নদীই নয়, স্থানীয় প্রভাবশালীদের অবৈধ দখলদারদের দৌরাত্ম্যে বরগুনার ছয়টি উপজেলায় প্রায় শতাধিক খালও এখন মৃতপ্রায়। নদীরক্ষা কমিশন দখলদারদের তালিকা তৈরি করে উচ্ছেদের সুপারিশ করলেও নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। দেশ রূপান্তরের অনুসন্ধানে জেলায় দখল ও দূষণে ধুঁকতে থাকা নদী ও খালগুলোর চিত্র উঠে এসেছে।
খাকদোন নদী বিষখালী ও পায়রা নদীকে যুক্ত করার পাশাপাশি বরগুনা সদর উপজেলার সঙ্গে আমতলী, তালতলী ও পাথরঘাটা উপজেলাকে নৌপথে যুক্ত করেছে। নদীটির বিষখালী অংশের ৬ কিলোমিটারে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বাকি ১৯ কিলোমিটারে ২১টি সেতুর নির্মাণের কারণে নৌযান চলাচল করতে পারে না। মাত্র ১৯ কিলোমিটারের মধ্যে কেন এত সেতু নির্মাণ করা হলো, তার কোনো উত্তর নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে সর্বশেষ নির্মিত দুটি সেতু মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দিয়েছে বলে দাবি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের। শুধু অপরিকল্পিত সেতু নির্মাণই নয়, জোয়ারের সময় উঠে আসা পলি জমে একসময়ের ৬৫০ মিটার প্রশস্ত খরস্রোতা খাকদোন এখন মৃতপ্রায় খালে পরিণত হয়েছে।
পাশাপাশি দখলদারদের দৌরাত্ম্যে নদীটির ঢলুয়া অংশ থেকে শুরু করে সোনাখালী পর্যন্ত তৈরি হয়েছে সহস্রাধিক পাকা-আধাপাকা অবৈধ স্থাপনা। নদীটি মরতে বসলেও বিষখালী অংশের ৬ কিলোমিটার ছাড়া বাকি নদী কেন ড্রেজিং করা হচ্ছে না, সে বিষয়ে প্রশ্ন করেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কাছে সন্তোষজনক উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে এ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নদীটি ড্রেজিংয়ের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে। শুধু খাকদোন নদীই নয়, এর সঙ্গে যুক্ত ১৫টি শাখা খালেরও এখন বেহাল দশা। অবৈধ দখলদার ও অপরিকল্পিত সøুইসগেট নির্মাণের ফলে এসব খালে নৌ-চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শুকনো মৌসুমে এসব খালে দেখা দেয় চরম পানি সংকট।