আমাদের দেশের মানুষ অনেক কিছু পেয়েছে। একদা আমাদের বড় হওয়ার কালে কত ধরনের যে অপ্রাপ্তি ছিল! আমরা বড় হয়েছি বিদেশের পুরোনো গুঁড়ো দুধ খেয়ে। চেরনোবিলের দুর্ঘটনার পর ফেলে দেওয়া দুধ বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়েছিল—এমনও শুনেছি আমরা। আমাদের সময় পোশাকের সমস্যা ছিল চরমে।
বলা বাহুল্য, পুরোনো পোশাকের বাজার ছিল তখন একমাত্র আশ্রয়। কার কাপড়, কখনকার পোশাক কিছুই জানা ছিল না। শুধু জানতাম ওগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করা। সাইজ মিলত না, ফ্যাশন মিলত না, তবু সে কাপড়েই আধুনিক হওয়ার চেষ্টা করতাম আমরা।
দিনকাল পাল্টেছে। আমাদের পোশাক এখন দুনিয়াময়। এই যে একক একটি দেশ অস্ট্রেলিয়া, যার কোনো ভৌগোলিক প্রতিবেশী নেই বললেই চলে, তার বাজারেও এখন ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। যেখানে যাই, বাংলাদেশের পোশাকের রমরমা বাজার। সেদিন সেখানকার টিভিতে দেখলাম করোনা-পরবর্তী বাজার সামাল দিতে গিয়ে বাংলাদেশি পোশাকের কথা বললেন সে দেশের বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, দামে-মানে বাংলাদেশ এখন সেরা। যার মাধ্যমে চাহিদা পূরণ করা সহজ হচ্ছে। আরও অনেক দিক থেকে তরতর করে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। খাবারের বাজারে, মসলাপাতির বাজারেও ঢুকেছে এ দেশ। আগের দিন আর নেই।
আমাদের দেশের মানুষ প্রবাসী বাংলাদেশিদের রেমিট্যান্সের কারণে ভালো আছেন। ভালো আছেন পরিশ্রমী কৃষক, পোশাকশ্রমিক আর মেহনতি মেধাবী মানুষের কারণে। এত সব পাওয়ার ভেতর যে অপ্রাপ্তি, আজ তার নাম ‘শান্তি’। শান্তি পাইনি আমরা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরের বছর থেকে যে শুরু, এখনো সেই ধারাবাহিকতা চলমান। সবকিছু পাওয়ার পরও শান্তি পায়নি দেশের মানুষ। কেন পায়নি? উত্তর একটাই—রাজনীতি। বছরের পর বছর দেশ শাসনে থাকা দলটি যেমন পারছে না, তেমনি দেশ শাসনের জন্য অধীর আগ্রহ ও উত্তেজনায় ভুগতে থাকা বিরোধীরাও জানে না শান্তি কোথায়।