পানিতে ডুবে হ্যাপি আক্তারের যমজ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। দাফনও হয়ে গেছে আগের রাতে। তবে বুকের ধনহারা পাগলপ্রায় এই মাকে জানানো হয়নি তা। তাঁকে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, এখনও হাসপাতালে আছে দুই ছেলে মো. হাসান ও মো. হোসাইনের (৭) লাশ। তাই যাঁকে পাচ্ছেন, তাঁর কাছেই ছুটে আবদার করছেন– ‘আমার হাসান-হোসাইন নাকি হাসপাতালে, তাদের কাছে আমারে নিয়ে যাও। আমি তাদের দেখব।’
গতকাল রোববার দুপুরে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও সংলগ্ন সুলতানপুরে হ্যাপির বাবার বাড়িতে দেখা যায় এ দৃশ্য। বৃষ্টির মধ্যেই ওই বাড়িতে ছুটে আসা স্বজন ও গ্রামবাসীকেও ছুঁয়ে যাচ্ছিল ঘটনাটি। তারা সান্ত্বনা দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টাই করছিলেন শুধু। নাতিদের মৃত্যুর খবরে জেলার হোমনা উপজেলার বাড়ি থেকে ছুটে আসেন অশীতিপর দাদা সফর আলী। তিনি জানান, ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল দুই নাতির জন্ম হয়। তাদের সবার ইচ্ছা ছিল আরবি শিক্ষায় উচ্চশিক্ষিত করার।
স্বজনরা বলছিলেন, প্রতি বছর ২১ এপ্রিল একসঙ্গে জন্মদিনের কেক কাটত হাসান-হোসাইন। একসঙ্গে জন্মেছিল, মৃত্যুও বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি তাদের। অভাবের সংসারে কষ্ট করে সন্তানদের লেখাপড়া করাচ্ছিলেন হ্যাপি। যখন তাদের ব্যবহারের জন্য কিছু কেনা হতো, তা একই রঙের কেনা হতো। শনিবার বাড়ির পাশের গর্তে দুই ভাইয়ের হলুদ রঙের দুই জোড়া জুতা পাওয়া যায়। এর সূত্র ধরেই গর্তের পানিতে পাওয়া যায় তাদের।