আমাদের দুঃখের কাহিনি অন্তহীন। প্রশ্ন হলো, কারণ কী? আরও বড় প্রশ্ন, উদ্ধারের উপায় কী? দুঃখের কারণ ওই নন্দ ঘোষই, তা যতই সরল শোনাক না কেন কথাটা। নন্দ ঘোষের নাম পুঁজিবাদ। একসময় ছিল মানুষ যখন নিজেকে খুবই অসহায় ভাবত। দার্শনিক হবস অবস্থাটার বর্ণনা দিতে গিয়ে মন্তব্য করেছেন যে মানুষ-জীবন তখন ছিল সলিটারি, পুওর, ন্যাস্টি, ব্রুটিশ ও শর্ট। সেই অবস্থা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য সামাজিক চুক্তির দরকার হয়েছিল, যে চুক্তির ভেতর থেকে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের উদ্ভব ঘটে। তারপর ইউরোপে রেনেসাঁ ঘটেছে। মানুষ ঈশ্বরকেন্দ্রিকতা ছেড়ে মনুষ্যকেন্দ্রিকতার জগতে চলে এসেছে, সৃষ্টি হয়েছে ইহজাগতিকতার ও ধর্মনিরপেক্ষতার। পথ পরিষ্কার হয়েছে পুঁজিবাদের বিকাশের জন্য। পুঁজিবাদ বিকশিত হলো। মানুষের জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সৃষ্টিশীলতার জগৎটা অনেক বড় হয়ে গেল, উন্নত হলো জীবনযাত্রার মান। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিল বৈষম্য, পুঁজিবাদের, যা অনিবার্য উপাদান। ফলে যে নৈরাজ্য ও বর্বরতা থেকে রাষ্ট্র মানুষকে মুক্ত করবে বলে ভাবা হয়েছিল, তেমনটা ঘটল না। পুঁজিবাদ নিজেই দেখা দিল মস্ত বড় বিপদ হিসেবে।