গর্ভাবস্থা মায়ের দেহে প্রচুর বাহ্যিক পরিবর্তন ঘটায়। প্রতিদিন কীভাবে গর্ভস্থ শিশুটি মায়ের পেটে বেড়ে উঠছে, তা জানা থাকলে আরও ভালোভাবে গর্ভাবস্থা মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে সহায়তা করে। সন্তানের মস্তিষ্কের বিকাশ মায়ের গর্ভাবস্থায়ই শুরু হয়। সে জন্য এ সময় দরকার মায়ের বাড়তি যত্ন।
মাত্র দুটি কোষের সমন্বয়ে তৈরি হয় জাইগোট বা ভ্রুণ; অতঃপর এই ভ্রুণটি মাতৃগর্ভে ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে। প্রাথমিক অবস্থায় এই ভ্রুণটি থাকে অতিশয় ক্ষুদ্র কণিকার মতো। কিন্তু ২৮০ দিনের মধ্যে এই ক্ষুদ্র কণিকাটি বেড়ে ওঠে পরিণত হয় ৩ কেজি ওজনের মানব সন্তানে।
প্রথম মাস: প্রথম মাস পূর্ণ হলে ভ্রুণের দৈর্ঘ্য হয় ৩ মিলিমিটার। এই সময় হৃৎপিণ্ড শরীরের অনেকটা অংশ জুড়ে থাকে এবং ধীরে ধীরে হৃৎস্পন্দন শুরু হয়।
দ্বিতীয় মাস: দ্বিতীয় মাস পূর্ণ হলে ভ্রুণের দৈর্ঘ্য হয় ২.৫ সেন্টিমিটার। এই সময় চোখের পাতা এক আঙুল তৈরি হয়।
তৃতীয় মাস: তিন মাস পূর্ণ হলে ভ্রুণের দৈর্ঘ্য হয় ৫ সেন্টিমিটার। এই সময় মায়ের জরায়ুর সাইজ হয় একটি কমলা লেবুর আকৃতির মতো।
চতুর্থ মাস: চতুর্থ মাস পূর্ণ হলে ফিটাসের ওজন হয় ১২৫ গ্রাম এবং দৈর্ঘ্য হয়, ১২.৫ সেন্টিমিটার। এই সময় যৌনাঙ্গ তৈরি হওয়া শুরু হয়।
পঞ্চম মাস: এই সময় অনাগত ভ্রুণ অ্যামনিয়টিক ফ্লুইড বা মায়ের পেটে জমে থাকা পানির মধ্যে নড়াচড়া করে এবং পেটের মধ্যে ধাক্কা দিতে শুরু করে। প্রত্যেক মায়ের কাছেই এই অনুভূতি খুবই আনন্দদায়ক। মেডিকেল পরিভাষায় একে বলা হয় কুইকেনিং।
ষষ্ঠ মাস: এই সময় চামড়ার নিচে ফ্যাট তৈরি হতে শুরু হয়। তাছাড়া পুরো শরীরে ছোট ছোট লোম তৈরি হয়, মোমের মতো এক ধরনের পিচ্ছিল জিনিস সারা শরীরকে আবৃত করে রাখে, একে বলা হয় ভারনিক্স। এই জিনিসগুলোও এ সময় তৈরি হয়।
সপ্তম মাস: এ সময় বাচ্চার ওজন হয় ৫০০ গ্রাম। হার্টবিট হয় ১৪০ বিট/মিনিট।
অষ্টম মাস: এখন প্রতি সপ্তাহে বাচ্চার ওজন বাড়ছে ১-২ পাউন্ড করে। বাচ্চার মাথা মায়ের শরীরের (জরায়ুর) নিচের দিকে যেতে শুরু করে।
নবম মাস: এই সময় বাচ্চার ওজন হবে ৩ কিলোগ্রাম কিংবা তার বেশি। বাচ্চার নড়াচড়া অতিরক্তি বেশি পরিমাণে বেড়ে যাবে।