ইংরেজিতে অনার্স পড়ুয়া নারায়ণগঞ্জের নিধী দেড় বছর ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছেন। ভর্তি আছেন জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউটে (নিকডু)। নিধীর বাবা বলেন, মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে দোড়ঝাঁপ করছি। চিকিৎসকরা বলেছেন, মেয়ের দুটো কিডনিই অকেজো। যেহেতু তার বয়স এখনো কম, কিডনি প্রতিস্থাপন করলে ভালো হবে। কিডনির জন্য আত্মীয় স্বজনদের দ্বারস্থ হচ্ছি, খোঁজ নিচ্ছি কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ আগ্রহ প্রকাশ করেনি। প্রচলিত আইনে অন্য মানুষ থেকেও তো কিডনি নেওয়া যাবে না। কিডনি পেলেও অপারেশন ও আনুষাঙ্গিকে অনেক টাকা খরচ। মেয়েকে সুস্থ করতে চেষ্টা করছি, জানি না কী হয়!
কিডনি স্থায়ীভাবে কাজ করতে পারছে না, তাদেরই কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিডনি প্রতিস্থাপনের আগ পর্যন্ত রোগীকে ডায়ালাইসিস করাতে হয়। তবে এসব রোগীর ক্ষেত্রে ডায়ালসিস থেকে কিডনি প্রতিস্থাপন উত্তম। তবে যাদের কিডনি দাতা থাকে না এবং আর্থিক সামর্থ্য নেই তারা ডায়ালসিস চালিয়ে যান।
দেশে কিডনি প্রতিস্থাপন আলোর মুখ দেখেছে। দেশে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এখন কিডনি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট (নিকডু), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), কিডনি ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলোজি হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বারডেম, পপুলার হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল, এভারকেয়ার হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করা যায়।
তবে বড় সমস্যা হচ্ছে কিডনি দাতা খুঁজে পাওয়া। বাংলাদেশের আইনে ২২ ধরনের আত্মীয় থেকে কিডনি নেওয়া যাবে। মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন (সংশোধন) আইন, ২০১৮ অনুযায়ী জীবন রক্ষায় নিকটাত্মীয়ের কিডনি নেওয়া যাবে। নিকটাত্মীয় হচ্ছেন, মা, বাবা, ছেলে, মেয়ে, ভাই, বোন, স্বামী, স্ত্রী ও আপন চাচা, ফুফু, মামা, খালা, নানা, নানি, দাদা, দাদি, নাতি, নাতনি এবং আপন চাচাতো, মামাতো, ফুফাতো, খালাতো ভাই বা বোন। তবে এসব নিকটত্মায়ীর বাইরে কিডনি গ্রহণের সুযোগ নেই।