শুক্রবার প্রকাশিত ১১টি শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলে উত্তীর্ণের হার গত বৎসর অপেক্ষা ৭ শতাংশের অধিক হ্রাস পাইলেও ৮০ শতাংশের অধিক শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হওয়া কম আনন্দদায়ক নহে। শিক্ষামন্ত্রী যথার্থই বলিয়াছেন, ২০২১ ও ২০২২ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার সহিত এই বৎসরের পরীক্ষা তুল্য হইতে পারে না। অতিমারি করোনার কারণে ঐ দুই বৎসর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাঠ্যসূচি ছিল সংক্ষিপ্ত; পূর্ণমান ছিল ৫০ নম্বর। পরীক্ষার সময়ও ছিল কম– দুই ঘণ্টা। অন্যদিকে, এই বার পরীক্ষা হইয়াছে বরাবরের মতো। পাঠ্যসূচি ছিল পূর্ণাঙ্গ; পূর্ণমান ১০০, সময়ও ছিল তিন ঘণ্টা।
মোটকথা, গত দুই বৎসর পরীক্ষার্থীরা বিশেষ কারণে যে সুবিধাটুকু পাইয়াছিল, এই বৎসরের পরীক্ষার্থীরা উহা পায় নাই। উপরন্তু করোনা-পূর্ববর্তী ২০১৯ ও ২০২০ সালে একই মানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণের হারও ছিল প্রায় এই বৎসরের ন্যায়– ৮২ শতাংশের কিছু বেশি। তবে এই বৎসরের ফলের কিছু দিক চিন্তার উদ্রেককারী বলিয়া আমরা মনে করি। প্রথমত, পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী অপেক্ষা ছাত্রের সংখ্যা ছিল বেশ কম, যাহা খোদ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিতেও পড়িয়াছে। এই ক্ষেত্রে শুধু এইটা বলা সম্ভবত যথেষ্ট, করোনাকালে ঝরিয়া পড়া ছাত্রদের শিক্ষাধারায় প্রত্যাবর্তনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করিলে এহেন পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটিত না।
এইবারের ফলের দ্বিতীয় যে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গভীর মনোযোগ দাবি করে উহা হইল, বরাবরের ন্যায় এইবারও মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলে নিয়ামকরূপে কাজ করিয়াছে ইংরেজি ও গণিতের ফল। অর্থাৎ এ দুই বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের দক্ষ করিয়া তুলিবার ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা– দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই বৎসরও অক্ষুণ্ন রহিয়াছে। অথচ বর্তমান প্রতিযোগিতাময় বিশ্বে জাতি হিসাবে যোগ্য আসন পাইতে হইলে শিক্ষাকে বিশ্বমানের পর্যায়ে উন্নীত করিবার কোনো বিকল্প নাই, যাহা অনেকাংশে নির্ভর করে উক্ত দুই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যুৎপত্তি অর্জনের উপর।