সারা সপ্তাহ রান্না করে, অফিস সামলে রবিবার ছুটির দিনে খুব বেশি খাটাখাটনি করতে কারও মন চায় না। অথচ ছুটির দিনে একটু ভাল-মন্দ না খেলেই নয়। হেঁশেলে খুব বেশি ক্ষণ থাকতে হবে না অথচ সুস্বাদুও হবে, এমন রেসিপির খোঁজ করছেন? এ ক্ষেত্রে ‘ওয়ান পট মিল’ দিয়েই করতে পারেন মুশকিল আসান। এক পদেই থাকবে ভাত, মাছ কিংবা মাংসের স্বাদ, রইল এমন তিনটি রেসিপির হদিস।
মাংসের ভুনা খিচুড়ি
ননস্টিক কড়াই গরম করে আঁচ কমিয়ে ভেজে নিন মুগডাল। মুগডালের রং বাদামি হয়ে এলে নামিয়ে চালের সঙ্গে ধুয়ে জল ঝরাতে দিন। আর এক বার কড়াই গরম করে তাতে পেঁয়াজ কুচি ও গরম মশলা ভেজে নিন। পেঁয়াজ বাদামি হয়ে এলে তাতে অল্প জল দিয়ে দিন। কিছু ক্ষণ নাড়াচাড়া করার পর আদা ও রসুন বাটা দিয়ে আর এক বার নেড়ে নিন। কিছু ক্ষণ নাড়াচাড়া করার পর হলুদ, লঙ্কা, ধনে, জিরে গুঁড়ো দিয়ে দিন। মশলা থেকে তেল ছেড়ে এলে পাঁঠার মাংসের ছোট ছোট টুকরো দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন। মিনিট কুড়ি ঢাকা দিয়ে মাংস সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। কিছু ক্ষণ পর ঢাকা খুলে চাল ও ডালের মিশ্রণটি মশলায় দিয়ে দিন। মিনিট দশেক আরও ভেজে নিন। চেরা কাঁচা লঙ্কা দিয়ে দিন। ভাজা হয়ে এলে তাতে গরম জল ঢেলে দিয়ে আবারও ঢাকা দিয়ে দিন। এক কাপ চাল হলে দু’কাপ জল দিতে হবে। খানিক পড়ে ঢাকনা খুলে আরও একবার নাড়াচাড়া করে ১০ মিনিটের জন্যে দমে বসান। ১০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে ঘি ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন মাংসের ভুনা খিচুড়ি।
ইলিশের বিরিয়ানি
বড় এলাচ, ছোট এলাচ, জায়ফল, জৈয়িত্রী, শাজিরে, সাদা মরিচ, লবঙ্গ, দারচিনি শুকনো তাওয়ায় ভেজে নিয়ে গুঁড়ো করে বিরিয়ানির মশলা তৈরি করে নিন। দইয়ে পেঁয়াজবাটা, রসুনবাটা, লঙ্কা গুঁড়ো, পরিমাণ মতো নুন ভাল করে মিশিয়ে এর মধ্যে ইলিশ মাছ মাখিয়ে রাখুন। মিনিট কুড়ি পরে কড়াইয়ে সামান্য তেল গরম করে মাছগুলি দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন। সামান্য নুন দিয়ে বাসমতী চালের ঝরঝরে ভাত বানিয়ে নিন। একটি পাত্রে ভাতগুলি ঢেলে তার উপরে সাজিয়ে দিন আগে থেকে কষিয়ে রাখা মাছগুলি। উপরে কাঁচালঙ্কা, ঘি, বিরিয়ানির মশলা আর ভাজা পেঁয়াজ ছড়িয়ে দিন। এ বার হাঁড়ির মুখ আটার ঘন মিশ্রণ দিয়ে ভাল করে আটকে দিন, যাতে হাঁড়ির ভাপ বাইরে বেরোতে না পারে। ১৫ মিনিট মতো মাঝারি আঁচে রাখুন। তৈরি হয়ে যাবে ইলিশ বিরিয়ানি।
চিংড়ি পোলাও
বাসমতি চাল এক ঘণ্টা আগে ধুয়ে জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তার পর চালের জল ঝরিয়ে নিতে হবে। কড়াই তেল গরম করে নুন, হলুদ মাখানো চিংড়ি মাছ ভেজে নিন। কড়াইয়ে আরও কিছুটা তেল ঢেলে তাতে তেজপাতা, গোটা গরম মশলা দিয়ে পেঁয়াজ কুচি আর টোম্যাটো কুচি দিয়ে নেড়ে নিন। এর পর আদাবাটা, রসুনবাটা, টক দই দিয়ে আবার কষিয়ে নিন। এর পর ধনে গুঁড়ো, লঙ্কাগুঁড়ো, নুন ও কয়েকটি কাঁচা লঙ্কা দিয়ে ভাল করে নাড়ুন। মশলা থেকে তেল ছেড়ে এলে তাতে সামান্য নুন, চিনি ও চিংড়িগুলি দিয়ে ভাল করে ঢাকা দিয়ে দিন। মিনিট পাঁচেক ঢাকা দিয়ে রান্না করে নিন। তার পর মশলা থেকে চিংড়ি মাছগুলি একটি পাত্রে তুলে নিন। আর ওই মশলায় চাল দিয়ে দিন। মশলার সঙ্গে চাল ভাল করে মিশিয়ে নিন। এ বার তাতে পরিমাণ মতো গরম জল ঢেলে দিন। কয়েকটি কাঁচালঙ্কাও দিয়ে দিতে পারেন। তার পর ঢাকা দিয়ে চাল সেদ্ধ হতে দিন। চাল সেদ্ধ হয়ে এলে পরিমাণ মতো কেওড়া জল, কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল দিয়ে ঢাকা দিয়ে রান্না হতে দিন কিছুক্ষণ। তার পর পোলাও আবার একটু নেড়ে গ্যাস বন্ধ করে পাঁচ মিনিট ঢেকে রেখে দিন। তৈরি হয়ে যাবে চিংড়ির পোলাও!