বেশ ক’বছর আগে থেকে ‘ব্রিকস’ নামে একটি আন্তর্জাতিক জোটের নাম নতুন করে শোনা যাচ্ছে। শুরুতে অর্থনৈতিক জোট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও পরে কেউ এটাকে বলছেন রাজনৈতিক জোট, কেউ ভূরাজনৈতিক, কেউবা উত্তরের চাপের বিরুদ্ধে দক্ষিণের ঠেকানোর প্রচেষ্টা হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবে যে যেভাবেই বিশ্লেষণ করুক না কেন, বর্তমানে শক্তির ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় ব্রিকস্ একটি ব্লক বা জোট হিসেবে নব্য আলোচনার জন্ম দিচ্ছে। ব্রিকস্ আমাদের দেশে আলোচনায় স্থান পাচ্ছে কারণ, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্রিকস এর সদস্যপদ লাভ করার জন্য আবেদন করেছে।
বর্তমানে ব্রিকসকে নতুন করে ভাবা হলেও এটার উৎপত্তি ও বিকাশ কিন্তু একবারেই নতুন নয়। তবে এর সম্প্রসারণ চিন্তা নতুন করে ভাবাচ্ছে। সেই ২০০০ সালের গোড়ার দিকে ব্রিকস ভাবনা শুরু হলেও গোল্ডম্যান স্যাক্সের জিম ওনিল ২০০১ সালে প্রথম ব্রিকসের প্রতিষ্ঠার ধারণা নিয়ে আসেন। চারটি দেশ ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীন শুধু ‘ব্রিক’ নামে ২০০৯ সালে এই জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটায়। তখন এসব দেশে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণের নিরীখে এই জোট গঠন করা হয়। এরপর ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে সদস্যপদ দিয়ে ‘ব্রিক’ থেকে ‘ব্রিকস্’ নামের শব্দবন্ধন তৈরি করে জোটটি। এরপর ২০১২ সালে সদস্য দেশগুলোর একজন কূটনীতিবিদ এটাকে ‘আলোচনার মঞ্চ নয়—বরং সমন্বিত হবার মঞ্চ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
ব্রিকসের ধারণার পর গোল্ডম্যান স্যাক্স উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে থেকে ‘দ্য নেক্সট ইলাভেন’ তালিকা প্রকাশ করে। সেই তালিকায় মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, তুরস্ক, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভিয়েতনামের পাশাপাশি বাংলাদেশও স্থান পায়। এরপর ফরাসি আর্থিক ও বীমা প্রতিষ্ঠান কোফেস ২০১৪ সালে ১০টি উন্নয়নশীল দেশ নিয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করে। সেখানে সম্ভাবনাময় উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে রয়েছে পেরু, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, কলম্বিয়া, শ্রীলঙ্কা, কেনিয়া, তানজানিয়া, জাম্বিয়া, বাংলাদেশ ও ইথিওপিয়া।