নাভির নিচের অংশে ব্যথা হলে তাকে তলপেটের ব্যথা হিসেবে দেখা হয়। তলপেটে ব্যথা খুব সাধারণ কারণে যেমন হয়, তেমনি আবার এর পেছনে থাকতে পারে মারাত্মক কোনো কারণ।
নারী-পুরুষনির্বিশেষে তলপেটে ব্যথার সাধারণ কারণগুলো নিয়ে প্রথমে আলোচনা করা যাক। তলপেটের ডানদিকে যদি তীব্র ব্যথা হয়, তাহলে তা অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা কি না, নিশ্চিত হতে হবে। অন্য কারণের মধ্যে আছে মূত্রথলির প্রদাহ, মূত্রথলির পাথর, প্রস্রাবের ইনফেকশন ইত্যাদি। কখনো কখনো কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা হজমের সমস্যা থেকেও তলপেটে ব্যথা হতে পারে। টানা ব্যথার সঙ্গে কোনো চাকা থাকলে, গায়ে জ্বর অনুভব করলে বা ওজন কমে যাওয়ার সমস্যা হলে অন্যান্য মারাত্মক কারণ, যেমন পেটের টিউমার, টিবি রোগ ইত্যাদির কথাও ভাবতে হবে।
মেয়েদের ক্ষেত্রে তলপেটে ব্যথার আরও কিছু বিশেষ কারণ রয়েছে। মাসিকের সময় এই ব্যথার কথা অনেকেই বলেন। দুই মাসিকের মাঝামাঝি সময়েও অনেকের ব্যথা হতে পারে, ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নির্গত হওয়ার কারণে। একে বলে ওভুলেশন পেইন। এন্ডোমেট্রিওসিস নামের এক জটিল ব্যাধিতেও তলপেটে ব্যথার উপসর্গ থাকতে পারে। জরায়ুতে কোনো প্রদাহ, টিউমার ইত্যাদি কারণে ব্যথা হয় হামেশাই। ডিম্বাশয় বা ওভারি নারীদের শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ওভারিতে প্রদাহ বা ইনফেকশন হলে, ওভারি প্যাঁচ খেয়ে গেলেও তলপেটে তীব্র ব্যথা হতে পারে। আরেকটা মারাত্মক কারণ হচ্ছে, যদি কোনো নারীর গর্ভধারণ জরায়ু বাদে অন্য জায়গায়, যেমন জরায়ু নালি বা ইউটেরাইন টিউব বা তলপেটের অন্যান্য স্থানে হয়। একে এক্টোপিক প্রেগনেন্সি বলে। সেই ক্ষেত্রে হঠাৎই তলপেটে মারাত্মক ব্যথা নিয়ে রোগী চিকিৎসকের কাছে আসতে পারেন, যার তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা খুবই জরুরি।