সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজকাল নানাজন রূপচর্চার নিজস্ব সব পদ্ধতির কথা জানান। এসব পদ্ধতিতে হাতের কাছে থাকা বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করতে দেখা যায়। কেউ লেবু দিয়ে তৈরি করেন ফেসপ্যাক, কেউ ব্যবহার করেন দারুচিনির গুঁড়া। কেউ মুখে মাখছেন জেলাটিন তো কেউ কেউ আরও এক ধাপ এগিয়ে, তৈরি করছেন আদা, রসুন, পেঁয়াজ ছাড়াও আরও অনেক কিছুর ফেসপ্যাক! প্রাকৃতিক উপায়ে রূপচর্চার পদ্ধতির যেন কোনো শেষ নেই! কিন্তু এভাবে যা ইচ্ছা তা-ই বা যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে রূপচর্চা করা কতটা উপকারী?
ক্ষতির কারণ হতে পারে ‘ডু ইট ইয়োরসেলফ’ পন্থা
নিজে নিজে রূপচর্চা করতে গিয়ে ত্বকের বিশাল ক্ষতি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ঐশী (ছদ্মনাম)। টিকটকে ভিডিও দেখে লেবু দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে মুখে মেখেছিলেন তিনি। কিছুক্ষণ পরই মুখ জ্বলতে শুরু করলে ফেসপ্যাক ধুয়ে দেখেন, ত্বক পুড়ে লাল হয়ে গেছে। এরপর দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে জানা যায়, লেবু অত্যন্ত অম্লীয় হওয়ায় তা কোনোভাবেই ত্বকে সরাসরি ব্যবহার করা উচিত নয়। হাতের কাছে যা পাওয়া যায়, তা দিয়েই রূপচর্চা করতে গিয়ে অনেকেই এমন বিপদ টেনে আনেন। আর এতে ত্বকের যে ক্ষতি হয়, তা সারতে লেগে যায় অনেক সময়।
চর্মরোগবিশেষজ্ঞ এবং কানাডার টরন্টোর ফ্যাসেট ডার্মাটোলজির প্রতিষ্ঠাতা গীতা যাদবের মতে, ‘অনলাইনে কেউ কেউ ভালো পরামর্শ দিলেও বেশির ভাগই ভাইরাল হওয়ার জন্য যা ইচ্ছা, তা-ই করছেন।’
ত্বকের জন্য প্রিজারভেটিভ ছাড়া পণ্যই কি ভালো
অনেকে রূপচর্চার পণ্যের গায়েও ‘প্রিজারভেটিভ ফ্রি’ লেখা দেখে পণ্য কেনেন। গীতা যাদব বলেন, ‘ত্বকের জন্য প্রিজারভেটিভ সাধারণত ক্ষতিকর নয়। রূপচর্চার পণ্যে গ্লাইকল, সোডিয়াম বেনজয়েট ইত্যাদি নানান নিরাপদ প্রিজারভেটিভ ব্যবহৃত হয়। তবে যেকোনো কিছু ব্যবহার করার আগে জেনেশুনে, যাচাই করে ব্যবহার করা ভালো।’
রূপচর্চার ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ব্যবহারের জন্য প্রাকৃতিক উপাদানের চেয়ে প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করাকে বেশি নিরাপদ মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘রূপচর্চার পণ্যে জীবাণুর বিস্তার রোধ করতে প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয়।’