এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে—এমন সতর্কবার্তা গত মে মাসেই দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মৌসুম শুরুর আগে সমন্বিতভাবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মশা নিধনের তাগিদ দিয়েছিলেন কীটতত্ত্ববিদেরাও। কিন্তু এতে গা করেনি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। সেই সনাতন পদ্ধতিতে ফগার মেশিনে ওষুধ ছিটিয়ে ও মাঝে মাঝে ‘চিরুনি অভিযান’ চালিয়ে মশকনিধনে দায় সেরেছে তারা। ফলে এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে এডিস মশাবাহিত ভাইরাস ডেঙ্গুর সংক্রমণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় সিটি করপোরেশন ভুল পথে হাঁটছে। মশা নিধন কার্যক্রম চলা উচিত কীটতত্ত্ববিদদের নেতৃত্বে। এডিস মশা ও লার্ভা নিয়ে গবেষণার জন্য দরকার ছিল সমৃদ্ধ ল্যাবরেটরি। কিন্তু ২৩ বছর ধরে সেদিকে কোনো নজর দেয়নি সিটি করপোরেশন। কারিগরিভাবে কিছু সরঞ্জাম দিয়ে ডেঙ্গু মোকাবিলার যে চেষ্টা চলছে, তা কোনো কাজে আসবে না বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডেঙ্গু মোকাবিলায় সিটি করপোরেশন ভুল পথে হাঁটছে বলে মন্তব্য করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘২৩ বছর ধরে আমরা ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখছি। কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখছি না। সিটি করপোরেশনের প্রতিটি জোনে ২০ থেকে ৩০ জন কীটতত্ত্ববিদ ও সহকারী কীটতত্ত্ববিদ প্রয়োজন। পাশাপাশি এ বিষয়ে গবেষণার জন্য ল্যাবরেটরি দরকার। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয় দরকার। আমরা বিশেষজ্ঞরা যে পরামর্শ দিচ্ছি, সিটি করপোরেশন তো সেদিকে হাঁটছে না, সেটা গ্রহণ করছে না। তারা কারিগরিভাবে ডেঙ্গুর প্রকোপ দূর করার চেষ্টা করছে। এভাবে ডেঙ্গুর প্রকোপ দূর করা যাবে না। বিশেষজ্ঞ ও কীটতত্ত্ববিদদের পরামর্শ মেনে এবং তাঁদের নেতৃত্বেই ডেঙ্গু মোকাবিলা করতে হবে।’