জন্মের পর থেকে শিশু মায়ের দুধ পেলে তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশ যে বহুগুণ বেড়ে যায় সে নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। শিশু ভূমিষ্ঠের প্রথম ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ দিলে গর্ভফুল পড়তে সহজ হয়, রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মাতৃদুগ্ধ পানে শিশু যেমন সুস্থ-সবল হয়ে বেড়ে ওঠে, তেমনি তার সর্বোচ্চ শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ নিশ্চিত হয়। উপকৃত হন প্রসূতি নিজেও।
মাতৃদুগ্ধ পান করালে স্তন ক্যান্সার, ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার, টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়। শিশুর রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে। ডায়রিয়া হওয়ার প্রবণতা ও এর তীব্রতার ঝুঁকি কমাতে পারে বুকের দুধ। শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ এবং কানের প্রদাহ কমায় এটি। দাঁত ও মাড়ির গঠনে সহায়তা করাসহ অনেক উপকারিতা আছে মাতৃদুগ্ধের।
পর্যাপ্ত পুষ্টি সরবরাহ
জন্মের পর প্রথম ছয় মাস শিশুর রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা, দাঁত ও হাড় গঠন এবং মজবুত হয় বুকের দুধের কারণে। হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখাসহ প্রায় সব ভিটামিন ও খনিজের জোগান দেয় বুকের দুধ। ফিডারের দুধ বা ফর্মুলা খাবার কখনোই এগুলো পূরণ করতে পারে না।
মুখের স্বাস্থ্য
বোতলজাত দুধে অভ্যস্ত শিশুদের দাঁতে ক্যারিজ বা গর্তসহ ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। নার্সিং বোতল ক্যারিজ নামের একটি সমস্যাও দেখা দেয়। যার কারণে বাচ্চাদের সামনের দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে অরুচি, অপুষ্টি, মনোযোগের ঘাটতি, প্রাণচাঞ্চল্য ও স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়াসহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। মাতৃদুগ্ধ পানে শিশুর মুখের স্বাস্থ্য তুলনামূলক ভালো থাকে।
আঁকাবাঁকা দাঁত প্রতিরোধ
গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুরা তাদের জীবনের প্রথম ছয় মাস বুকের দুধ পান করেছে তাদের এলোমেলো দাঁত হওয়ার আশঙ্কা ৭২ শতাংশ কমে যায়। স্তন্যপায়ী শিশুদের চোয়ালের গঠন ও মাংশপেশির টান স্বাভাবিক থাকে।