খেতে সুস্বাদু, একে কোথাও কোথাও ‘ফলের রাজা’ও বলা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় ফলটার একটাই সমস্যা—উৎকট গন্ধ। দুনিয়ার সবচেয়ে দুর্গন্ধময় ফলের তালিকায় এর নাম থাকে সবার ওপরে—ডুরিয়ান। ফলটার গন্ধ আবর্জনা কিংবা নোংরা মোজার দুর্গন্ধের সঙ্গেও তুলনীয়!
ডুরিয়ানের গন্ধ এতই কটু যে থাইল্যান্ড, হংকং, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং এসব দেশের আশপাশের আরও কিছু দেশের গণপরিবহন, বিমানবন্দর ও হোটেলে ফলটা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কোনো আবদ্ধ জায়গায় এই ফলের খোসা ছাড়ানো রীতিমতো অন্যায়। দুর্গন্ধের কারণেই ফলটা যুক্তরাষ্ট্রে অচ্ছুত। তবে চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তা বেশ জনপ্রিয়।
প্রশ্ন হলো, ডুরিয়ানের গন্ধ এত খারাপ কেন? আবার কেন এমন বাজে গন্ধের পরও কোনো কোনো দেশে ফলটা এত জনপ্রিয়?
ডুরিয়ান কী
ডুরিয়ান জন্মায় চীন ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায়। আমাদের কাঁঠালের জাতভাই বলতে পারেন একে। আকারে লম্বা। খোসা কাঁটাযুক্ত। খোসার রং বাদামি-সবুজ। খোসা ছাড়িয়ে, দুই ভাগ করে ফলটি খাওয়া যায় ঠিক কাঁঠালের মতোই। কাঁটাগুলো এতই তীক্ষ্ণ যে ডুরিয়ানঘটিত কারণে মানুষের মৃত্যুর খবরও শোনা যায়! ফলের ভেতরটা ঘন, শাঁসালো, পায়েসের মতো। এর বিচি লম্বা লম্বা, অনেকটা অ্যাভোকাডোর বিচির মতো। ফলের ভেতরটা সাধারণত হালকা হলুদ রঙের। ভীষণ উৎকট গন্ধ হলেও ফলটা মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, চীন ও ইন্দোনেশিয়া এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলোয় দারুণ জনপ্রিয়। এসব দেশে ফলটাকে সুস্বাদুই মানা হয়।
ডুরিয়ানের গন্ধ এত বাজে কেন
ডুরিয়ানের গন্ধ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, এতে ৪৪টি ভিন্ন ভিন্ন গন্ধযুক্ত রাসায়নিক যৌগ উপস্থিত। এর মধ্যে তিনটি যৌগ ডুরিয়ান ফলেই প্রথম আবিষ্কৃত হয়। কিন্তু এই ফলের কুখ্যাত গন্ধের জন্য কোনো নির্দিষ্ট একটা যৌগই কেবল দায়ী নয়। সব যৌগের সংমিশ্রণেই এমন গন্ধের সৃষ্টি।
ফলটা কি যুক্তরাষ্ট্রে পাওয়া যায়
যুক্তরাষ্ট্রে ডুরিয়ান আইনত নিষিদ্ধ বা অবৈধ নয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্রেও ডুরিয়ান কেনা সম্ভব। এশীয় দোকানগুলোয় ফলটা পাওয়া যায় বটে। তবে গন্ধের কারণেই ফলটা বেশির ভাগ জায়গায় বহন করতে নিষেধ করা হয়।