অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান। সম্প্রতি তিনি ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কারণ এবং এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় নিয়ে আজকের পত্রিকার মাসুদ রানার সঙ্গে কথা বলেছেন।
আজকের পত্রিকা: চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণ কী?
ড. মো. গোলাম ছারোয়ার: বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হলো, বিভিন্ন ধরনের কীটনাশকের (ইনসেকটিসাইড) যথেচ্ছ ব্যবহার। একটা ব্যাপার আমরা জানি না যে এডিস মশা কতটুকু প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। এর প্রকৃত ব্যাপারটা আমাদের জানা নেই। তবে আমরা পরিষ্কার করে বলতে পারছি যে শুধু রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহারই করে এসেছি। ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) বা মাল্টিপল অ্যাপ্রোচের ব্যবহার করছি না। যার কারণে এডিস মশার বংশবিস্তার অনেক গুণ বেড়ে গেছে। এর জন্য অবশ্যই পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও পরিবেশের দূষণ অবস্থাও দায়ী।
আজকের পত্রিকা: ডেঙ্গু যে দেশে ঢোকে, সেখান থেকে বের হয় না। কিন্তু একে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আমাদের দেশে দুই যুগের বেশি সময় ধরে এর নিয়ন্ত্রণে কোনো কাজ করা হয়নি কেন?
ড. ছারোয়ার: এটি একটি চমৎকার প্রশ্ন। এ বিষয়টি আমি বারবার বিভিন্ন মিডিয়ায় বলেছি। এর কারণটা হলো, যখন নির্দিষ্ট লেভেলের নিচে মশাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব, তখনই কিন্তু ডেঙ্গুতে আমাদের মৃত্যুর হার শূন্যতে চলে আসবে। এর জন্য আমাদের মূল যে কাজটা করতে হবে তা হলো, ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) বা মাল্টিপল অ্যাপ্রোচের ব্যবহার। মানে, সমন্বিতভাবে পরিস্থিতিটাকে মোকাবিলা করছি না। আমরা শুধু রাসায়নিকের ব্যবহার করছি। যখন আমরা শুধুই রাসায়নিক ব্যবহার করছি, তখন মশা প্রতিরোধী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার অন্যান্য প্রাকৃতিক শত্রুও ধ্বংস হচ্ছে। ফলে মশার লার্ভাকে ধরে খেয়ে ফেলার কোনো প্রাকৃতিক জীব অবশিষ্ট থাকছে না। এমতাবস্থায় মশা অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে বংশবিস্তার করে চলছে।