দেশে পবিত্র ঈদুল আজহার পাঁচ দিনের ছুটিতে নারী ও শিশু নির্যাতনের তথ্য জানিয়ে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কলের সংখ্যা বেড়েছে। ছুটি শুরুর আগের পাঁচ দিনের তুলনায় এ সময় ফোনকল প্রায় ২৬ শতাংশ বেশি হয়েছে। পুলিশের ধারণা, ঈদে শহর থেকে বহু মানুষ গ্রামে যাওয়ায় তাঁদের কারও সামনে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে ৯৯৯-এ ফোন করেছেন। সে কারণে এ সময় কলের সংখ্যা বাড়তে পারে। আর সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, অবসরে বাইরে কাজ না থাকায় বিভিন্ন বিষয়ে কথা-কাটাকাটি থেকে সহিংসতার ঘটনা বাড়তে পারে।
ঈদুল আজহার সরকারি ছুটি ছিল ২৭ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর তথ্য অনুসারে, এই পাঁচ দিনে নারী ও শিশু নির্যাতন বিষয়ে কল এসেছে ৪৯৩টি। দিনের হিসাবে প্রায় ৯৯টি করে। ছুটি শুরুর আগের ৫ দিন ২২-২৬ জুন এমন কলের সংখ্যা ছিল ৩৯২, দিনের হিসাবে ৭৮টির বেশি।
ছুটিতে যে ৪৯৩টি কল এসেছে, তার মধ্যে রয়েছে পারিবারিক (স্বামী) নির্যাতনের ১৭৬টি, হত্যার ২৭টি, যৌন হয়রানির ১৯টি, ধর্ষণের ১০টি, ধর্ষণচেষ্টার ৯টি, যৌতুকের কারণে নির্যাতনের ৮টি, মা-বাবার হাতে নির্যাতনের ৩টি এবং অন্যদের (পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও প্রতিবেশী) মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনায় কল এসেছে ২৪১টি।
২৭ জুন দিবাগত রাত সোয়া দুইটায় ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে সাভারের নবীনগরের তল্লাশিচৌকির কাছ থেকে এক নারীকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেয় আশুলিয়া থানা-পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার মুঠোফোনে ওই নারী (২৮) প্রথম আলোকে বলেন, ছয় বছর আগে বিপত্নীক দুই ছেলের বাবার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। এটি তাঁরও দ্বিতীয় বিয়ে। দুই সৎছেলে তাঁর কাছাকাছি বয়সী। সংসারে আগে থেকেই কলহ ছিল। ঘটনার দিন রাত ১১টায় কলহের একপর্যায়ে স্বামী ও সৎছেলেরা তাঁকে মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেন। পরে তিনি ৯৯৯-এ ফোন করেন।
ওই নারী জানান, পুলিশ দিয়ে আসার পর ওই দিন ভোরে স্বামী ও সৎছেলেরা তাঁকে আবার বাসা থেকে বের করে দেন। এরপর তিনি স্বামীর গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে চলে যান। বিষয়টি সালিসের মাধ্যমে সুরাহা করা হবে—এমন প্রতিশ্রুতি পেয়ে তিনি এখন রাজবাড়ীতে এক স্বজনের বাসায় অবস্থান করছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, দ্বিতীয়বার বের করে দেওয়ার বিষয়টি পুলিশকে জানাননি।