অনেকেই মনে করে বিশ্বে এই মুহূর্তে একমাত্র নীতিবাদী দেশ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এটি যে কতবড় বিভ্রান্তিকর তথ্য— সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর তা আবারও পরিষ্কার করে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র কোনও অবস্থাতেই নিজের স্বার্থের বাইরে এক কদমও ফেলবে না— মোদির এই সফর তা আবারও প্রমাণিত। নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগে সেই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তা পরিষ্কার করে দিয়েছেন।
ইতিহাস প্রমাণ করে যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র স্বার্থ তার করপোরেট বা অর্থনৈতিক স্বার্থ। মানবাধিকার, গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা এই সব কিছুই হচ্ছে কথার কথা। মোদি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী, তখন সেখানে সংগঠিত হয় এক ভয়াবহ দাঙ্গা। প্রাণ হারায় হাজারের ওপর মানুষ। ভারতে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে— যুক্তরাষ্ট্র এই অজুহাতে মোদিকে কালো তালিকাভুক্ত করে তার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো। এর কিছুদিন পরেই ভারতে অনুষ্ঠিত হলো সাধারণ নির্বাচন। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি সেই নির্বাচনে জয়ী হলে সবার আগে গুজরাটে একগুচ্ছ ফুলের তোড়া নিয়ে হাজির হলো ভারতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ন্যান্সি পাওয়েল। মোদি তখনও সরকার গঠন করেননি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষে মোদিকে হোয়াইট হাউজে আমন্ত্রণ জানাতে ভুললেন না পাওয়েল।
হাজার হলেও ভারত জনসংখ্যার দিক হতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। একটি উঠতি অর্থনীতি। ২০৫০ সাল নাগাদ হয়ে যেতে পারে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক পরাশক্তি। চীনের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক তেমন একটা ভালো নয়। এবার মোদির আগে যুক্তরাষ্ট্রের ৭৫ জন আইন প্রণেতা নিজ দেশের প্রেসিডেন্ট বরাবর পত্র মারফত জানালেন— তিনি যেন মোদির সফরের সময় ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টা আলাপ করেন। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র সাফ জানিয়ে দিলেন, মোদিকে মানবাধিকার বিষয়ে বক্তৃতা দেওয়া তাদের কাজ নয়।