সংসারে মন্দ আছে যেমন তেমনি ভালোও আছে। ভালোর সংখ্যাই অধিক, নইলে সংসার চলে কী করে। তবে ভালোরা দুর্বল, মন্দরা প্রবল। তাই মন্দরাই রাজত্ব করে। শিশুদের দেখেছি ভালো ও মন্দকে খুব পরিষ্কারভাবে ধরে ফেলে, এবং সমস্ত কিছুতে ওই দুই ভাগে ভাগ করে নেয়। তাদের কাছে ভালো যদি না হয় তাহলে অবশ্যই মন্দ। মাঝখানে কিছু রাখে না। কবি মুহম্মদ ইকবাল প্রায় সমাজতন্ত্রীই ছিলেন, কিন্তু ধর্মকেও ছাড়েননি, সে জন্য লিখেছেন, স্রষ্টা এবং সৃষ্টির মধ্যে কেন তফাৎ? মধ্যবর্তী মোল্লাকে আজ হাঁকিয়ে দাও। কিন্তু মধ্যবর্তীকে হাঁকিয়ে দেওয়া যায়নি। তারা আছে। এই মধ্যবর্তীদের নানা চেহারা, এরা কেউ মধ্যস্বত্বভোগী, কেউ দালাল, আর অত্যন্ত ভদ্র যারা তারা উদারনীতিক।
শিশুর কথা বলছিলাম। বিশ্বসভ্যতা অতিঅদ্ভুত এক উচ্চতায় গিয়ে পৌঁছেছে। একেবারে থুরথুরে বৃদ্ধ না হোক প্রাপ্তবয়স্ক তো বটেই। কিন্তু করোনাভাইরাসের ঐতিহাসিক আক্রমণ এক ধাক্কায় বিশ্বের সব মানুষকেই একেবারে শিশু বানিয়ে ছেড়েছে। সদ্যজন্মপ্রাপ্ত শিশুটি যেমন মাতৃগর্ভের নিরাপত্তা হারিয়ে কাঁদে, বয়স্করা কাঁদুক না-কাঁদুক নিদারুণ নিরাপত্তাহীনতায় যে ভুগেছে তাতে সন্দেহ কী। বয়স্কদের তুলনায় শিশুদের অবশ্য নিরাপত্তাহীনতা সবসময়েই অধিক ছিল, এখন মানব সভ্যতার এই অবিশ্বাস্য উন্নতির কালেও শিশুদের নিরাপত্তা যে বেড়েছে এমন নয়। করোনাকালে সবচেয়ে অনিরাপদ অবস্থায় রয়েছে শিশুরাই। শিশুর যতœ সর্বাগ্রে প্রত্যাশিত তার মায়ের কাছ থেকেই। সেই মায়েরা নিজেরাই খুব বিপদের মধ্যে পড়েছে। অতিআধুনিক শহর নয়াদিল্লি, সেখানে ৮৬ বছরের একজন মহিলা ধর্ষিত হয়েছেন এক যুবকের দ্বারা। বাংলাদেশের অবস্থা সম্পর্কে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বলেছে করোনাকালে নারী ও শিশু নির্যাতনের সব খবর মিডিয়াতে আসেনি; পরিষদের কাছে খবর আছে যে এই সময়ে নির্যাতন বেড়েছে। দিল্লির এবং বাংলাদেশের উভয় ঘটনাই স্বাভাবিক।