২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজধানীর মতিঝিলে খুন হয়েছিলেন পুলিশ কনস্টেবল বাদল মিয়া। ওই ঘটনায় আদালত মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন প্রধান আসামি রিপন নাথ ঘোষকে। পলাতক থাকায় ওই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) জারি করেন আদালত। তবে সবার ‘চোখ ফাঁকি’ দিয়ে তিনি বাসের হেলপারি করছিলেন প্রকাশ্যেই। শেষ পর্যন্ত ১০ বছর পর সম্প্রতি র্যাব মৃত্যুদণ্ডের ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
২০১২ সালের ডিসেম্বরে পুরান ঢাকায় চাঞ্চল্যকর বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাজন তালুকদার। তার বিরুদ্ধেও রয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা; কিন্তু ১১ বছরেও তামিল হয়নি সেই পরোয়ানা। শুধু তাই নয়, গত বছরের নভেম্বরে ঢাকার সিএমএম আদালত
এলাকা থেকে দুর্ধর্ষ জঙ্গি মাইনুল হাসান শামিম ওরফে সিফাত এবং আবু সিদ্দিক সোহেলকে ছিনিয়ে নেয় তার সহযোগীরা। ওই দুই জঙ্গিকে গ্রেপ্তারেও রয়েছে পরোয়ানা; কিন্তু গ্রেপ্তার করা যায়নি গত সাত মাসেও।
শুধু খুনের মামলার আসামি রাজন তালুকদার, জঙ্গি মাইনুল বা সোহেল নয়, রাজধানীর ৫০ থানায় এ ধরনের অন্তত ৪১ হাজার ৩০৪ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) ঝুলছে। এসব আসামিকে গ্রেপ্তারে আদালত থেকে শুরু করে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাগিদ দিলেও সাফল্য আসছে না। পরোয়ানা মাথায় নিয়েই পুলিশের ‘চোখ ফাঁকি’ দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে এসব আসামি।
পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরোয়ানার এসব আসামির মধ্যে হত্যা, ধর্ষণ, জঙ্গি, ডাকাতি, ছিনতাই, অস্ত্র, মাদক, চোরাচালান, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, নাশকতাসহ নানা মামলার আসামি রয়েছে। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে আদালতের দণ্ড থাকার পাশাপাশি জামিনে বেরিয়ে হাজিরা না দেওয়ায় পরোয়ানা জারি রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) ড. খ. মহিদ উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, সব সময়ই পরোয়ানা তামিলের জন্য থানাগুলোকে বলা হয়। তবে যতদিন পুলিশের কার্যক্রম ও যতদিন বিচার ব্যবস্থা চলবে, ততদিন ওয়ারেন্টও আসবে। এটি চলমান প্রক্রিয়া।