দুদিন পরই পালিত হবে ঐতিহাসিক পলাশী দিবস। পলাশীর তথাকথিত যুদ্ধ এবং নবাব সিরাজের পতনকাল থেকে আজকের সমকালের দৈর্ঘ্য হচ্ছে দুইশত পঁয়ষট্টি বছর। এই আড়াই শতাব্দীর ইতিহাসের দিকে তাকালে বাঙালির মানস বৈশিষ্ট্য যেমনি স্পষ্ট হয়ে ওঠে, তেমনি এই জনপদের রাজনৈতিক বাস্তবচিত্রও উন্মোচিত হয়। পলাশীর পতনকালে বাংলার রাষ্ট্রশক্তির অভ্যন্তর ভাগের যে অবস্থা ছিল আজকের বাস্তবতার সঙ্গে তার আশ্চর্য মিলটাও দেখা যায়। রাষ্ট্রশক্তির বিবেচনার আগে আমরা তাকাতে চাই বাঙালি জাতিসত্তার দিকে। বিষয়টি খুবই জরুরি।
বাঙালি জাতির উদ্ভব-ইতিহাস যতটা কৌতূহলোদ্দীপক ততটাই নির্মম। নৃ-তাত্ত্বিক বিবর্তন, গঠন-পুনর্গঠনের ভেতর দিয়ে আফ্রো-এশীয় কিংবা ইঙ্গ-ইউরোপীয় জাতিগুলোর উদ্ভব প্রক্রিয়ার চেয়ে অনেক জটিল বাঙালির উদ্ভব। ইতিহাসের এই হেঁয়ালি-প্রহেলিকার বৈশিষ্ট্য এবং জাতিটির ভাব আর আচরণের দিকে তাকিয়েই মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানরা বাঙালি মুসলমানদের প্রতি যেমনি নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে, ঠিক একই ধারণা বাঙালি হিন্দুর প্রতি ভারতীয় হিন্দিবলয়ের আর্য-রক্তের দাবিদার হিন্দুদের। ধর্মগ্রন্থ বেদ তো নয় কেবল, মহাকাব্য মহাভারতও বাঙালি নিন্দায় ভরপুর।