প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয় শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি গ্রন্থি, যা পেটে বাঁ দিকে পাকস্থলীর পেছনে আড়াআড়ি থাকে। এর দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। এক. ইনসুলিন তৈরি, যা দেহের বিপাক ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। দুই. পাচক রস তৈরি, যা খাবার হজমে সাহায্য করে।
বর্তমানে অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার বাড়ছে। এটি এমন একটি ক্যানসার, যা অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। যখন শরীরের অন্যান্য অঙ্গে বা চতুর্থ বা পঞ্চম ধাপে পৌঁছায়, তখন রোগটি শনাক্ত করা যায়। ফলে চিকিৎসা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
উপসর্গ কী
ক্লান্তিবোধ, ক্ষুধা অনুভূত না হওয়া, অরুচি, ওজন হ্রাস, পেটের ওপরের দিকে ব্যথা, পিঠে ব্যথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি দিনে দিনে বাড়তে থাকে। আরও অগ্রসর হলে জন্ডিস, পেটে পানি দেখা দিতে পারে।
অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের সঠিক কারণ জানা নেই। তবে ধূমপান, ডায়াবেটিস, অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের পারিবারিক ইতিহাস, অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ, মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন, অত্যধিক ওজন বৃদ্ধি অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের দুটি ধরন আছে—
১. অ্যাক্সোক্রাইন অগ্ন্যাশয় ক্যানসার। যেসব কোষ পাচক রস তৈরি করে, সেখান থেকে এই ক্যানসার উৎপন্ন। প্রায় ৯৫ ভাগ রোগীর অ্যাক্সোক্রাইন অগ্ন্যাশয় ক্যানসার হয়।
২. অ্যান্ডোক্রাইন অগ্ন্যাশয় ক্যানসার। ইনসুলিন ও অন্যান্য হরমোন তৈরি করে, এমন সব কোষ থেকে উৎপত্তি হয়।
অগ্ন্যাশয় ক্যানসার প্রথম পর্যায়ে অগ্ন্যাশয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। দ্বিতীয় পর্যায়ে অগ্ন্যাশয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেই টিউমার আকারে ২ থেকে ৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বেড়ে যায়। তৃতীয় পর্যায়ে টিউমারটি আকারে ৪ সেন্টিমিটারের বেশি এবং কাছাকাছি লসিকা গ্রন্থিগুলোতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। চতুর্থ পর্যায়ে ক্যানসার নিকটস্থ রক্তনালি বা স্নায়ুতে ছড়িয়ে পড়ে। পঞ্চম পর্যায় শরীরের দূরবর্তী অঙ্গেও ছড়িয়ে পড়ে।