প্রখ্যাত লেখক, নিসর্গবিদ দ্বিজেন শর্মা ‘শ্যামলী নিসর্গ’ গ্রন্থে কদম ফুল সম্পর্কে লিখেছেন, ‘বর্ষায় নানান রঙের, নানান বর্ণের বিভিন্ন ফুল ফুটলেও কদম ফুলকে বলা হয় বর্ষার দূত।…কোনো বর্ষণমুখর সন্ধ্যায় যখন বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল ফোটে, দমকা হাওয়ায় এক ঝলক গন্ধ জানালা গলিয়ে ঘরের স্তব্ধতাকে চকিত করে, আমরা তখনই বর্ষার সুগভীর আহ্বানের অর্থ উপলব্ধি করি।’
বর্ষা ও কদমের সম্পর্কের রসায়নে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে অসংখ্য গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথের প্রকৃতি পর্যায়ের গানের সংখ্যা ২৮৩টি। ঋতুবৈচিত্র্যে তিনি গানগুলোকে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত—এই ষড়্ঋতুক্রম অনুযায়ীই ভাগ করে গীতবিতানে গ্রন্থিত করেছেন। গীতবিতানে বর্ষার গান আছে ১১৪টি। বর্ষার গানে নানান আঙ্গিকে, নানান প্রেক্ষাপটে এসেছে কদমের প্রসঙ্গ।
‘এসো নীপবনে ছায়াবীথিতলে
এসো করো স্নান নব ধারা জলে।’
বর্ষা ও কদম নিয়ে গান-কবিতার পসরা সাজিয়েছেন কাজী নজরুল ইসলাম, জসীম উদ্দীন, আল মাহমুদ, শামসুর রাহমানসহ উল্লেখযোগ্য সব বাঙালি কবি-সাহিত্যিক। কদম ও বর্ষা ঘিরে বাঙালির আবেগের পালে বাড়তি হাওয়া যোগ করেছেন কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। নাটকের নাম দিয়েছেন ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’। উপন্যাসের নাম দিয়েছেন ‘বাদল দিনের দ্বিতীয় কদম ফুল’। লিখেছেন গান।