খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশের সাফল্য এখন বহুল প্রশংসিত। অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতা ২০২৩-২৪ এর ৫৬ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে– বাংলাদেশ বিশ্বে ধান উৎপাদনে তৃতীয়, ইলিশ উৎপাদনে প্রথম, মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয়, সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয়, ছাগল উৎপাদনে চতুর্থ এবং ছাগলের মাংস উৎপাদনে সপ্তম। কিন্তু বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক-২০২২ অনুযায়ী বাংলাদেশের স্থান ১২১টি দেশের মধ্যে ৮৪তম, যা কিছুদিন আগেও ছিল ৭৬তম। ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ অর্থাৎ ১ কোটি ৮৮ লাখ মানুষ এখনও অপুষ্টিতে ভুগছে। দেশের ১২ কোটির বেশি মানুষের পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের সামর্থ্য নেই। এ সংকটের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে নারী ও শিশুদের ওপর। বাংলাদেশের ১৫ থেক ৪৯ বছর বয়সী নারীর মধ্যে ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ রক্তস্বল্পতায় ভুগছে।
উপরন্তু খাদ্য উৎপাদনে সাফল্যের পেছনে যে কৃষকের প্রাণান্ত পরিশ্রম প্রধানতম, সেই কৃষকই তাঁর পণ্যের উপযুক্ত দাম পাচ্ছে না পণ্যের বণ্টন, ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণের সীমাবদ্ধতার কারণে। ফলে বিশেষত যুব কৃষকদের ক্রমাগত পেশা পরিবর্তনের কারণে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থায় জন্ম নিচ্ছে নতুন এক সংকট। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সরকারের বাজেট পরিকল্পনায় যুবদেরকে কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত করা বা যে নারী কৃষক কৃষি খাতের শূন্যতা পূরণে এগিয়ে এসেছে, তাদের কাজের স্বাচ্ছন্দ্য ফেরাতে কোনো দিকনির্দেশনা নেই।