আরব দেশে এক সময় অনারব শিশুদের উটের দৌড়ের জকি করা হতো। এখন দেখা যাচ্ছে, দুনিয়াজুড়ে বিনোদনের জকি করা হচ্ছে শিশু-কিশোরীদের। উটের ওপর কাউকে না বসালে উট দৌড়াবে না। গরিব দেশের পাচার হওয়া কিংবা স্বেচ্ছায় পাঠানো শিশুদের সেই মারাত্মক ঝুঁকির কাজে বাধ্য করা হতো। সেই কুপ্রথা থেকে সরেছে আরবরা। শিশুর বদলে রোবট বসে উটকে দৌড়ানি দেয়। পাশ্চাত্যে নারী রোবট বানানো হচ্ছে নিঃসঙ্গ পুরুষদের জন্য। আর উপমহাদেশের বিনোদন ইন্ডাস্ট্রি শিশুদের দিয়ে যৌন আবেদন জাগানো নাচ নাচিয়ে নিচ্ছে। টেলিভিশন, ফেসবুক রিলে, ইউটিউব ও টিকটকে শিশু-কিশোরীরা বিনোদনের জকির ভূমিকায় নেমে পড়ছে। কোথাও কোনো আওয়াজ নেই। রাষ্ট্রের পতন হয় সশব্দে; কিন্তু নীতি-নৈতিকতার মৃত্যু ঘটে নীরবে।
এক ফেসবুক বন্ধু মা তাঁর কিশোরী কন্যার আবেদন জাগানো নাচের ভিডিও গর্বের সঙ্গে শেয়ার করেন। ফেসবুকের দেয়ালে দেখি, কোনো ছোট্ট শিশু অসাধারণ দক্ষতায় হিন্দি সিনেমার টিপিক্যাল কোনো বিনোদনমত্ত নাচ নেচে ফেলেছে। তা নিয়ে অভিভাবকের গর্ব দেখি, দর্শকের বাহবা সাবাশ মন্তব্য পড়ি। ডিশ চ্যানেলে দেখা যায় কোনো রিয়েলিটি শোর জমজমাট মঞ্চে কোনো শিশু-প্রতিভার পরিণত দেহভঙ্গিমাময় নাচ ও গান। অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাকারীরা এসব করিয়ে নিচ্ছেন। অভিভাবকরাও বেজায় খুশি। এভাবেই…এভাবেই তাঁদের আদরের কন্যা সেলিব্রিটি হয়ে উঠবে। বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির কেউকেটা হবে। সেলিব্রিটিজম শেখাচ্ছে– শোভন হও বা অশোভন; বিখ্যাত হওয়াই আসল কথা। বিখ্যাত হলে টাকা আসবে; ভিডিওর ভিউ লাখ ছাড়ালেও টাকা।