সমস্যাটা শুধু মণিপুরের, আপাতত তা মনে হলেও সংকট নিঃসন্দেহে সামগ্রিকভাবে পুরো উত্তর-পূর্ব ভারতের। সেভেন সিস্টার বলে যত আদর করেই ডাকা হোক না, দেশের উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো সম্পর্কে আমার দেশের জনগণের বড় অংশ, স্বাধীনতার এত বছর বাদেও সম্পূর্ণ না হলেও যথেষ্ট অন্ধকারে। তথাকথিত মেইনস্ট্রিম ভারতের কাছে আজও এই মঙ্গোলয়েড অরিজিনদের একমাত্র পরিচয় ট্রাইব্যাল, উপজাতি বলে। কখনো কখনো কলকাতার প্রগতিশীলদের অনেকেই তাদের অক্লেশে তাচ্ছিল্য করে চিঙ্কি বলে ডাকেন। বেশ কয়েক বছর আগে দিল্লি, দেশের রাজধানী শহরে নিডো তানিয়ামকে খুন হতে হয়েছিল। নিডোর ‘অপরাধ’ ছিল ও ওর চেহারা নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করায় সে তার প্রতিবাদ করেছিল। মূলধারার ভারতের এই আত্ম অহমিকা ইদানীং বাড়ছে। শুধু বাড়ছে নয়, মেলশভেনিজম, ব্রাক্ষণ্যবাদ মিলেমিশে যে নিও রাডিক্যাল হিন্দুত্ববাদ সারা দেশের পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে, মণিপুর তার বাইরে নয়। দেশের শাসকদের বহুত্ববাদী ভারতকে বদলে একটা ছাঁচে সবাইকে জুড়ে তোলার কৌশল মণিপুর সমস্যারও অন্যতম কারণ।
এই মুহূর্তে মণিপুর আক্ষরিক অর্থেই অগ্নিগর্ভ। কুকি ও অন্যান্য জরজাতিদের সঙ্গে মেইতেইদের লড়াই রাজ্যে গৃহযুদ্ধের চেহারা নিয়েছে। সরকারিভাবেই গত এক মাসে খুন হয়েছেন একশর বেশি সাধারণ মানুষ। আহত অসংখ্য। নিজের গ্রাম, এলাকা ছেড়ে অন্তত পঞ্চাশ হাজার লোক চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।