‘ভীষ্ম গেল, কর্ণ গেল, শল্য মহারথী। ঝাড়বাতি নিভে গেল জোনাকির পোঁদে বাতি!’ জাপানের ওসাকাতে অবস্থানকালে ঠাকুর পরিবারের সন্তান সন্দ্বীপ ঠাকুর নিজের পরিবারের দুরবস্থা বোঝাতে মহাভারতের প্রসঙ্গ টেনে ওঁর জ্যাঠামহাশয়ের কাছে শোনা এই শোলকটি শুনিয়েছিলেন। কয়েক দিন আগে আমি নিজে একটি চারলাইন লিখেছিলাম—‘মাঝি অতিরিক্ত হলে ডুবে যায় নৌকা। অতিরিক্ত নেতাভারে মঞ্চ ভেঙে ব্যাকা। উৎখাত করিতে পারে, হেন শক্তি নাই। অতি দর্পে হত লঙ্কা! কেন ভুলে যাই?’ যে কোনো ক্ষমতার অবসানে এই ‘অতি’-র একটা ভূমিকা আছে বৈকি।
বরফযুগ শেষ হয়ে পৃথিবী উষ্ণ হতে শুরু করেছে কমবেশি ১৪ হাজার বছর আগে। এই যুগটাকে বলে ‘হোলোসেন’ যুগ। সভ্যতা বলতে মোটামুটি আমরা যা বুঝি, সে ব্যাপারটা শুরু হয়েছে এই হোলোসেন যুগে, খুব বেশি হলে ছয় হাজার বছর আগে। ‘চক্রবৎ পরিবর্ততে সুখানি চ দুখানি চ’— সংস্কৃত প্রবাদ। সুখ এবং দুঃখের মতো ক্ষমতা এবং সভ্যতাও চক্রাকারে সৃষ্টি হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে আজ পৃথিবীর এ প্রান্তে, কাল ও প্রান্তে। মিশরীয় সভ্যতা, রোমান সভ্যতা, আরব সভ্যতা, মায়া সভ্যতা সবই আগে পরে ধ্বংস হয়েছে। গড়ে ওঠা এবং ধ্বংস হওয়া উভয়েই ক্ষমতা ও সভ্যতার অতি স্বাভাবিক ভবিতব্য।