১৯৭১-এ স্বাধীনতা অর্জনের আগে আমরা প্রায় ২০০ বছর পরাধীন ছিলাম। ১৭৫৭ সালে পলাশী যুদ্ধে মীরজাফরসহ কতিপয় বিশ্বাসঘাতকের বেইমানির কারণে ইংরেজদের কাছে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পর ভারতবর্ষে ইংরেজ বেনিয়াদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আইন প্রতিপালনে বাধ্য ছিল এ উপমহাদেশের মানুষ। তাদের সেই শাসন জারি ছিল ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত। ওই বছর সিপাহি বিদ্রোহের ব্যর্থতা, মুঘল সাম্রাজ্যের শেষ প্রতিনিধি সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের পরাজয় এবং তাকে বার্মায় (বর্তমান মিয়ানমার) নির্বাসনের পর ইংরেজরা ভারতবর্ষে তাদের দখলদারিত্ব কায়েম করে। ওই বছরই পুরান ঢাকার সদরঘাটসংলগ্ন ‘অন্টাঘর’ নামে পরিচিত পার্কে ব্রিটেনের মহারানি ভিক্টোরিয়ার ভারতবর্ষের শাসনভার হাতে নেওয়ার ঘোষণাপত্র পাঠ করে শোনানো হয়েছিল। সেই থেকে পার্কটির নামকরণ হয়েছিল ‘ভিক্টোরিয়া পার্ক’। উল্লেখ্য, সিপাহি বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার পর বিদ্রোহে জড়িত ১১ জন সিপাহিকে এ পার্কে ফাঁসি দিয়ে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। সিপাহি বিদ্রোহের ১০০ বছর পূর্তিতে ১৯৫৭ সালে সেই মহান শহীদদের স্মরণে সেখানে চার স্তম্ভের একটি মিনার তৈরি করা হয়। সেই সঙ্গে পার্কটির নাম বদলে রাখা হয় ‘বাহাদুর শাহ পার্ক’। যদিও চার স্তম্ভের ওই সুউচ্চ মিনারের শীর্ষদেশে আগের ‘১৮৫৭ সালের শহীদ স্মরণে’ কথাটি এখন আর লেখা নেই। মুছে ফেলা হয়েছে। ফলে নতুন যারা ওটা দেখবেন তারা বুঝতেই পারবেন না কেন সেটা তৈরি করা হয়েছিল।