বর্তমানে সন্তানদের বিদেশ পাঠানোর ব্যাপারে পরিবারের আকাঙ্ক্ষা বেড়েছে। আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন অভিভাবকরা সন্তানকে অন্য একটি দেশে পাঠাতে চান। এ প্রবণতা দেশের শিক্ষিত (নিম্ন) মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে বেড়েছে। তারা বিশ্বাস করে, বিদেশে সন্তানরা তাদের স্বপ্ন ও চাহিদা পূরণ করতে পারবে। কয়েক বছর আগেও গ্রাম থেকে ঢাকায় স্থানান্তর হওয়া বিশাল ব্যাপার ছিল। কিন্তু যানজট, দূষণ, চাকরির অনিশ্চয়তা, ক্রমাগত ব্যয় বৃদ্ধি ও আবাসন সমস্যার কারণে ঢাকাই অনেককে দেশ ত্যাগে ব্যাকুল করছে। বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন দেখলেও অনেকে জানেনও না সেখানে গিয়ে তারা কী করবেন? কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ছাড়াই স্নাতক শেষে বিদেশ চলে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছেন তরুণরা। জীবন নিয়ে তাদের সহজ ও নিরাপদ ভাবনা হয়ে দাঁড়িয়েছে অভিবাসন। তাদের ধারণা, বিদেশে যেতে পারলে পড়াশোনা, কর্মসংস্থান সবই করতে পারবেন। অনেকের বিশ্বাস, বাংলাদেশে তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই।
দেশ থেকে এখন মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিদেশ যাওয়ার ট্রেন্ড চলছে। শুধু রাজধানীতে নয়, ছোট-বড় প্রায় সব শহরের দেয়ালে, ওভারব্রিজে, বাসস্টেশন ও রেলস্টেশনে এমনকি যানবাহনেও বৃত্তি কর্মসূচি, ভিসা পরামর্শ কেন্দ্র ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা বৃদ্ধির বিজ্ঞাপনে সজ্জিত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অভ্যন্তরে আইইএলটিএস বা টোফেল কোর্সের প্রচারপত্রও চোখে পড়ার মতো। পত্রিকার পাতাগুলোও বৃত্তি, স্টুডেন্ট ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট এমনকি বিভিন্ন দেশে স্থায়ী অভিবাসনের রমরমা তথ্যের জোগান দিচ্ছে। বর্তমানে এমন কোনো শিক্ষার্থী পাওয়া যাবে না, যার পরিচিত কেউ বিদেশে পড়াশোনা করছেন না।