জনসংখ্যা জরিপের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ হলো সম্প্রতি। প্রাথমিক জরিপ-পরবর্তী যাচাইয়ের কাজ শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার। তার পরও জনসংখ্যার মোট সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক রয়ে গেছে। তবে এবারের নিবন্ধে আমি যেটা নিয়ে আলোচনা করতে চাই সেটি হলো যুব বা তরুণ জনগোষ্ঠী। মোট জনসংখ্যার ৪২ দশমিক ৮৪ শতাংশ ১৫-৩৯ বছর বয়সী। এছাড়া শূন্য থেকে ১৪ বছর বয়সী ২৮ দশমিক ৮১ এবং চল্লিশোর্ধ্ব মানুষের হার ২৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। তরুণ শ্রেণীর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৪৬ শতাংশ। জনসংখ্যা জরিপের এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা ও বিশ্লেষণ হবে কিন্তু আমাদের অর্থনীতিতে দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে তাদের ওপর নির্ভর করতে হবে সবচেয়ে বেশি।
আমাদের তরুণদের নানামুখী আকাঙ্ক্ষা আছে। তাদের আকাঙ্ক্ষাগুলো বাস্তবায়নে সমাজ কীভাবে সাজানো হচ্ছে সেটি দেখা প্রয়োজন। একটা বিষয় হচ্ছে, তরুণরা সমাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে। আরেকটা বিষয় হলো, তরুণ জনগোষ্ঠীকে গ্রহণ করার জন্য সমাজ ও রাষ্ট্র কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করেছে। সন্দেহ নেই, তরুণ-তরুণীদের ভূমিকাই আগামীতে আলোচনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে সামনে আসবে। সাম্প্রতিক সময়ে তরুণদের অর্থনৈতিক শক্তির দিকটি বোঝাতে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড শব্দটি ব্যবহার করা হচ্ছে। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড একটা বৃহৎ ধারণা। ডিভিডেন্ড বিষয়টি অটোমেটিক নয়। ডিভিডেন্ড পেতে হলে শ্রম দিতে হয়, বুদ্ধি দিতে হয়, কৌশল অবলম্বন করতে হয়। ডিভিডেন্ড আপনা-আপনি হাসিল হয় না। নীতিনির্ধারকদের এ বিষয়টা বোঝা খুব জরুরি। বাংলাদেশের বর্তমান জনগোষ্ঠীর এ তরুণ আধিক্য সবসময় থাকবে না। পরবর্তী পর্যায়ে তরুণদের চেয়ে বয়স্কদের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। অনেক দেশের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সময়কাল বড় ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের হাতে আছে মাত্র একটি দশক। আগামী এক দশকে অনেক কাজ করতে হবে। আগামী এক দশক হবে রূপান্তরের দশক।