বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে সরু রাস্তাটা এঁকেবেঁকে চলে গেছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার যাত্রামুড়া থেকে ভুলতার গোলাকান্দাইল পর্যন্ত। কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধটির উত্তরের বেশিরভাগ অংশ পড়েছে রূপগঞ্জে আর দক্ষিণের অধিকাংশ সোনারগাঁয়ের অধীনে। বেড়িবাঁধ ধরে যেতে যেতে দুই পাশের আলাদা ভৌগোলিক পরিচয় চোখে না পড়লেও পরিবেশ-প্রকৃতির তফাত চোখে পড়ে স্পষ্টভাবে। বাঁধের উত্তর পাশ ঘেঁষে কালো ও বিষাক্ত পানির খাল, তার পাড়ে ঘরবাড়িসহ নানা স্থাপনা। সবই বিবর্ণ-ধূসর হয়ে উঠেছে। টিনের ঘরবাড়িগুলো মরচে পড়ে জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। অনেক গাছপালাই কেবল মরা কাণ্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
অন্যদিকে দক্ষিণের চিত্রটা পুরো উল্টো। যাত্রামুড়া থেকে একটু এগিয়ে গেলে তুলনামূলক কম হলেও দক্ষিণ পাশে কিছু চাষের জমি চোখে পড়ে। উত্তর পাশের খালের মতো নেই কালচে বিষাক্ত পানির খাল।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, একসময় উত্তর পাশেও ঢেউ খেলত ফসলের মাঠ। গাছে গাছে ছিল ফুল-ফল আর পাখির কলকাকলি। খাল আর পুকুরে ছিল নানা জাতের মাছ। তবে গেল দুই দশকে কলকারখানার দূষিত ধোঁয়া ও বর্জ্যে তাদের এলাকাটি অনুর্বর হয়ে গেছে। ধূসর হয়ে গেছে জনপদ। মানুষের শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা অজানা অসুখ। পেশা বদলে বাধ্য হয়েছেন কৃষকরা। জেলেরা হয়ে গেছেন রিকশাচালক কিংবা মজুর।
যাত্রামুড়া বেড়িবাঁধ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নানা রঙের তরল বর্জ্য কয়েকটি বড় নালা দিয়ে খালে গিয়ে পড়ছে। এ পানি আবার মিশছে শীতলক্ষ্যায়। খালের অন্য অংশটি দখলে-দূষণে প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। যদিও সম্প্রতি খালটি খননের কাজ শুরু হয়েছে।