সম্প্রতি হিন্দু নারীর অধিকার সুরক্ষা বিষয়ে আদালতের রুল জারি করায় বিপক্ষের বন্ধুরা ভীষণ ক্ষিপ্ত। তাই যাঁরা হিন্দু আইন সংস্কার চাইছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সংরক্ষণবাদী হিন্দু নেতারা বিষোদ্গার করেই চলেছেন এবং অত্যন্ত সুকৌশলে সম্পত্তিতে নারীর অধিকার ও বিবাহবিচ্ছেদের বিষয়টিকে হিন্দুধর্মের ওপর আঘাত বলে সাধারণ মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।
বাবার সম্পত্তিতে হিন্দু নারীর অধিকারের প্রসঙ্গ এলেই যে হাস্যকর অজুহাতটি তাঁরা দিয়ে থাকেন তা হলো, হিন্দু মেয়ে সম্পত্তির অধিকার পেলে তাঁদের বিয়ে করে হিন্দুর সম্পত্তি মুসলমান ছেলেরা দখল করে নেবেন। মনে হয় যেন হিন্দু ছেলেরা নন, হিন্দু মেয়েরাই কেবল বিয়ে করে ধর্মান্তরিত হন! তা মেয়েরা সম্পত্তির মালিক হলে ধর্মান্তরিত হওয়ার কারণে যদি সম্পত্তি বেহাত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে তো ছেলেদের বেলাতেও সেই একই আশঙ্কা থাকে। তাহলে হিন্দু ছেলেদেরও বাবার সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা উচিত! কিন্তু তা তো হচ্ছে না। হিন্দু ছেলেরা মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করে ধর্মান্তরিত হওয়ার ফলে বাবার সম্পত্তিতে ছেলেদের উত্তরাধিকার তো বহাল তবিয়তে থাকছে! আসলে অজুহাত বিশৃঙ্খলা তৈরি করার, যাতে সম্পত্তিতে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা না হয়। যাঁরা হিন্দু নারীর অধিকার সুরক্ষার বিরোধিতা করছেন, তাঁরা বলছেন, আগে হিন্দু নারীর নিরাপত্তা দেন, সংখ্যালঘু কমিশন করুন, তারপর তাঁদের অধিকারের কথা ভাবুন। হ্যাঁ, তাঁরা সংখ্যালঘুর অধিকার ও নারীর নিরাপত্তা রক্ষার জন্য আন্দোলন করুন, কিন্তু এর সঙ্গে হিন্দু নারীর অধিকার সুরক্ষার কী সম্পর্ক? আসলে মৌলবাদী হিন্দু জোটের স্বার্থলোভী মূর্খ নেতারা নারীর অধিকারে ভয় পান।